বাঘের মুখ থেকে বেঁচে ফেরা সেই ‘বাঘা সামাদ’ পেলেন অর্থ সহায়তা

তিন দশক আগে সুন্দরবনের বাঘের মুখ থেকে অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ফেরেন বাগেরহাটের শরণখোলার মো. আব্দুস সামাদ হাওলাদার। যিনি ‘বাঘা সামাদ’ নামে পরিচিত। অবশেষে আর্থিক সহায়তা পেলেন তিনি।
দেশের অন্যতম শীর্ষ অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টে তার জীবন-সংগ্রামের খবর প্রকাশের পর শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন তার পাশে দাঁড়িয়েছে। এক বছরের জন্য প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফাউন্ডেশনটি, যা এই হতদরিদ্র মানুষটির জীবনে আনবে কিছুটা স্বস্তি।
একসময় গ্রামের বীর উপাধি পেলেও সময়ের স্রোতে বাঘা সামাদের গল্প যেন ফিকে হয়ে গিয়েছিল। বাঘের আক্রমণে দুই চোখ হারানো, জিভ ও ঠোঁটে কামড় বসানো জীবনের এ যেন এক ‘ওয়াইল্ড লাইফ’ সিনেমার বাস্তবিক প্রতিচ্ছবি। কিন্তু এই বীরত্বের পরই তার জীবন মোড় নেয় চরম দারিদ্র্য ও নিঃসঙ্গতার দিকে। ভোলা নদীর বেরিবাঁধের ঢালুতে একাকী একটি ছোট টিনের ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন তিনি। স্ত্রী আলেয়া বেগম মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালালেও বার্ধক্যে তিনিও এখন আর তেমন কিছুই করতে পারেন না। দুই ছেলেও অভাবের কারণে আশ্রয়ণ প্রকল্পে আলাদা থাকেন। একসময় ভিক্ষা করে দিন কাটানো সামাদ শরীর খারাপ হওয়ায় এখন তাও পারেন না।
গত ৮ জুলাই ঢাকা পোস্টে বাঘা সামাদের করুণ জীবনকাহিনী প্রকাশিত হলে তা নজরে আসে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের। তাদের এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া সামাদের মতো একজন মানুষের জন্য নিঃসন্দেহে এক বড় আশ্রয়। এখন অন্তত আগামী এক বছর তাকে অর্থের অভাবে ওষুধ কিনতে বা অনাহারে দিন কাটাতে হবে না।
আরও পড়ুন
বাঘা সামাদ বলেন, যখন হাত ও চোখে ব্যথা শুরু হয় তখন টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারি না। এখন এই সহায়তা কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।
দীর্ঘ তিন দশক ধরে বাঘের থাবা থেকে বেঁচে ফিরেও যিনি ব্যথা, ব্যর্থতা আর অবহেলার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছিলেন। অবশেষে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ তার শেষ জীবনে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাবে। স্থানীয় বাসিন্দারাও সরকারের কাছে অনুরূপ সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে বাঘা সামাদের বাকি জীবনটুকু অন্তত শান্তিতে কাটে।
শেখ আবু তালেব/এএমকে