ফরিদপুরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা

ফরিদপুরে স্ত্রীকে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী। পরে স্বামী নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চরকৃষ্ণনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। লাশ দুইটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইমারত হোসেন বলেন, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হাট্টা হরিপুর এলাকার ওফিরউদ্দিনের ছেলে বিপ্লব মণ্ডল (২৫) ৬ বছর ধরে ফরিদপুর সদরের কাচারদিয়া একটি ইটভাটায় ট্রলি চালানোর কাজ করে আসছেন। এই এলাকায় থাকার কারণে ইটভাটার পার্শ্ববর্তী নূরুল ইসলামের মেয়ে লামিয়ার (২০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিপ্লব মণ্ডলের।
তিনি আরও বলেন, প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে ৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিপ্লব ও লামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর লামিয়ার বাবা নূরুল ইসলাম নিজের বাড়ির পাশে চরকৃষ্ণনগর এলাকাতেই জায়গা কিনে বাড়ি বানিয়ে দেন তাদের। সেখানেই বসবাস করতেন বিপ্লব ও লামিয়া।
ইউপি সদস্য ইমারত হোসেন বলেন, গত সোমবার (৪ জানুয়ারি) লামিয়াকে নিয়ে বিপ্লব শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে আসেন। বুধবার দুপুরে স্ত্রী লামিয়া তার মায়ের সঙ্গে অন্যের বাড়িতে চাল কুটতে যান। কিছু সময় পর বিপ্লবকে খাবার দিতে লামিয়া বাড়িতে আসেন।
দীর্ঘ সময় পার হলেও লামিয়া তার মায়ের কাছে চাল কুটতে না যাওয়ায় মা শিউলি বেগম বাড়িতে এসে দেখেন লামিয়া অচেতন হয়ে ঘরের মধ্যে পড়ে আছে। শিউলি বেগমের চিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে এসে লামিয়াকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লামিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, হাসপাতাল থেকে ফিরে সবাই বিপ্লবকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে বিপ্লবের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় বিপ্লব ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে রয়েছে। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
লামিয়ার মা শিউলি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিপ্লব শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে বিপ্লব বাড়িতে গিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেছে। কী হয়েছিল ওদের— আমরা বুঝতে পারিনি। দুটি প্রাণ শেষ হয়ে গেলো। ওদের এখনও কোনো সন্তান হয়নি। এভাবে ওরা চলে গেলো।’
লামিয়ার বাবা নূরুল ইসলাম বলেন, ওদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিয়ে বিয়ে দিয়েছিলাম। থাকার জন্য আমার বাড়ির পাশেই একটি জমি কিনে ঘর করে দিয়েছিলাম। কী কারণে এমন করল— বুঝতে পারলাম না।
কোতোয়ালি থানার এসআই ফুরকান হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিককলহের জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর স্বামী বিপ্লব নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এমএসআর