নরসিংদীতে নারীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে স্বামীর মরদেহ নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হানিফ মাস্টার ও এরশাদ সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধে আহত হওয়ার ১৪ দিন পর তাজুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
রোববার (৩ আগষ্ট) দিবাগত রাত আনুমানিক ১ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
পরে গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় রায়পুরার পান্থশালা ফেরিঘাট এলাকায় মরদেহটি নিয়ে আশা হলে নিহতের স্ত্রী'র মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন মরদেহটি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে বিকেল তিনটার দিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এর আগে গত ২১ জুলাই সংঘর্ষের সময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন তিনি। ওইদিন দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে হানিফ মাস্টারের অনুসারী মোমেনা বেগম নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।
নিহত তাজুল ইসলাম রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ বালুচর এলাকার মোতালিব মিয়ার ছেলে। তিনি মোমেনা বেগম হত্যা মামলার ৫২ নং আসামী ছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান।
নিহতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম মুঠোফোনে বলেন, ২১ তারিখ সংঘর্ষের সময় বাড়িতে ঢুকে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার স্বামীর পায়ে গুলি করে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও ঢামেকে নেওয়া হয়। সর্বশেষ গত রাতে আইসিইউ সংকট হলে ঢাকার হোমকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরো বলেন, সকালে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি থানায় না গিয়ে ভুল বসত পান্থশালা ফেরিঘাটে গিয়ে থামে। পরে আমার স্বামীর মরদেহটি নিয়ে থানায় যাওয়ার সময় বেশকয়েকজন লোক সেখানে এসে গাড়িটি আটকে দেয়। এ সময় তারা আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মরদেহ নিয়ে চলে যায়। উপস্থিত সকলে হানিফ মাস্টারের সমথর্ক। এর আগে ২১ জুলাই দাবি অনুসারে চাঁদা না পেয়ে আমার স্বামীকে গুলি করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হানিফ মাস্টারের অনুসারী জসিম উদ্দিন অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন। তিনি জানান, তারা এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নন।
বাঁশগাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আতিয়ার রহমান জানান, মরদেহটি সায়দাবাদ তার মামা বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে নিহতের কোনো নিকটাত্মীয় পাওয়া যায়নি। মরদেহের এক পায়ে প্লাস্টার ছিল। হাসপাতাল থেকে মরদেহটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই রায়পুরা আনা হয়েছিল। তবে নিহতের স্ত্রীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মরদেহ নেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে জানা যাবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ২১ জুলাইয়ের ঘটনায় মোমেনা বেগম হত্যা মামলার ৫২ নং এজহারভুক্ত আসামী ছিলেন এই তাজুল ইসলাম।
তন্ময় সাহা/এমটিআই