কিশোরগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যুবলীগ নেতা লিটন গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম লিটনকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় পাকুন্দিয়া উপজেলার শ্রীরামদী এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রফিকুল ইসলাম লিটন একই এলাকার মৃত আব্দুস সালাম লালু মিয়ার ছেলে এবং পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সহসভাপতি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পাকুন্দিয়া এলাকায় খুনের উদ্দেশে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে ছাত্রদের ওপর হামলা ও সহযোগিতার অপরাধে গত বছর পাকুন্দিয়া থানায় দায়ের করা মামলায় লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানা-পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে থানায় বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গেও জড়িত তিনি। পাশাপাশি অন্যের জমি দখল করা, মসজিদ মাদ্রাসার হুজুরদের বিভিন্ন সময়ে হামলা করে গুরুতর আহত করাসহ বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
এমনকি পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে অন্যের জমি জোর-জবরদস্তি করে রাতের আঁধারে ঈদগাহ মাঠের সঙ্গে সংযুক্ত করা। পছন্দ অনুযায়ী ঈদগাহ ও মসজিদ কমিটি গঠন করার জন্য তার একটি নিজস্ব বাহিনী ছিল।
আরও পড়ুন
এ ছাড়া ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার ১নং শ্রীরামদী কেন্দ্রে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রশাসন দিয়ে বাড়ি ছাড়া করে রাতভর ভোট ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০২১ সালের পাকুন্দিয়া পৌর নির্বাচনের কেন্দ্র দখল করে নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলামকে বিজয়ী করতে মোবাইল ফোনের প্রার্থী অ্যাড. জালাল উদ্দিনের কর্মী সমর্থকদের উপর তার নেতৃত্বে হামলা হয়।
এলাকাবাসী আরও জানান, স্বৈরাচার সরকারের আমলে পুলিশের সাবেক আইজিপি কিশোরগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী মনোনীত এমপি নূর মোহাম্মদের ছত্রছায়ায় সে এলাকাবাসীদের জিম্মি করে নানা অপকর্ম করেছে।
এমনকি মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়ে (কিশোরগঞ্জ-টোক) সড়ক ও জনপথের অধিনে মসজিদের ভূমি অধিগ্রহণের টাকা নিজ অ্যাকাউন্টে নিয়ে মসজিদ নির্মাণে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ আছে। এলাকাবাসী জানান, মসজিদের টাকা তার অ্যাকাউন্টে নিয়ে গেলে মসজিদের নতুন ভবন নির্মাণকাজ থেমে যায়। মসজিদে নামাজ না পড়তে পেরে পাশের একটি ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় নামাজ পড়তে হচ্ছে মুসুল্লিদের।
এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সেক্টরে সারা বছর চাঁদাবাজি করায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে থানায় অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীরা। স্বৈরাচার সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন মামলা নেয়নি শুধু পুলিশের সাবেক আইজিপির আস্থাভাজন থাকায়।
পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুজায়েত হোসেন রফিকুল ইসলাম লিটনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর কুখ্যাত এই যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার মামলার আসামি।
মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এএমকে