রাস্তার দুপাশে রাখা পাটকাঠির কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা

রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর টু বহরপুর সড়কের দুপাশ দখল করে রাখা হয়েছে পাটকাঠির স্তুপ। এতে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গত এক সপ্তাহে এই সড়কে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। কৃষকদের জন্য পাটকাঠি গুরুত্বপূর্ণ হলেও পথচারী ও যানবাহন চালকদের জন্য তা এখন মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অনেক জায়গায় স্তুপ থেকে পাটকাঠি রাস্তায় পড়ে রয়েছে। জামালপুর থেকে বহরপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাকা সড়কের দুই পাশে গড়ে প্রায় ৪ ফুট করে রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে পথচারী ও যানবাহন চালকদের চলাচলে চরম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
বহরপুর এলাকার বাসিন্দা আজিবর মণ্ডল বলেন, এই অঞ্চলে এক সময় কোনো পাকা রাস্তা ছিল না। তখন কৃষকেরা পাটকাঠি নদী দিয়ে ভাসিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতেন। এখন রাস্তা হয়েছে, কিন্তু তারা রাস্তাকেই পাটকাঠি রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছেন। প্রতি শুক্রবার ও শনিবার অনেক দর্শনার্থী এ গ্রামীণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। কিন্তু রাস্তার দুই পাশে পাটকাঠি রাখার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বহরপুর আবাসন এলাকার আরেক বাসিন্দা সুজয় হালদার জানান, রাস্তা সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চালকেরা বেশি আহত হচ্ছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে পাটকাঠিগুলো সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
স্থানীয় এক ভ্যানচালক রহমত আলী বলেন, এই রাস্তায় অনেক বাঁক রয়েছে। পাটকাঠির কারণে অনেক সময় বাঁকের সামনে কী আছে দেখা যায় না। এতে ভ্যান চালাতে কষ্ট হয় এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
এদিকে, কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমি থেকে পাট কেটে তা শুকিয়ে নেওয়ার পর পাটকাঠি সড়কের পাশে রাখা ছাড়া তাদের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। চারপাশে জলাবদ্ধতার কারণে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা নেই। আবার পাটকাঠি পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ হওয়ায় বাধ্য হয়েই সড়কের পাশে রাখা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে একাধিক আইনজীবী জানান, সড়কের পাশে কোনো প্রকার পণ্য, কাঠ বা ফসল রাখা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তদারকির অভাবে এই আইন কার্যকর হচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন মানুষকে অজান্তেই মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিগুলো দেখেছি। এতে সড়ক সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। সড়কে যেন পাটকাঠির কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা না থাকে, সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এআরবি