ডাকসু-জাকসুর মতো আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে জনগণ ভোট দেবে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন করেছে। শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে, হলের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অথচ আজ সেই নির্যাতিত শিবিরই সবার জন্য নিরাপদ ঠিকানা হয়ে উঠেছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পাবনার সাঁথিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা উলামা বিভাগ আয়োজিত উলামা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ডাকসু ও জাকসুর হাওয়া এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের জনগণ আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাবে। হাসিনা সরকার দেশকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে তাঁবেদারি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। ইসলাম নির্মূল করার সব আয়োজন সম্পূর্ণ করেছিল। এরই অংশ হিসেবে মাওলানা নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে, মাওলানা আব্দুস সোবহানকে জেলখানায় নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। এছাড়াও ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। যে জনগণ সেই ফ্যাসিবাদী সরকারকে বিদায় দিয়েছে, তারা নতুন করে আর কোনো ফ্যাসিবাদকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেবে না। ঢাবি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ইসলাম বিজয়ের সূচনা হয়েছে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সম্পর্কে তিনি বলেন, এসকে সিনহা ছিল সব ষড়যন্ত্রের মূল হোতা। পরে শেখ হাসিনার দৌঁড়ানিতে তিনি পালিয়ে গেছেন। জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যারা দুর্ব্যবহার করেছে, তারাই এখন দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অবৈধ বিচারের সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। এরা খুনি, এদের কোনো ক্ষমা নেই। হাসিনা নিজেও পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন, তার নেতাকর্মীরা এখন এতিম হয়ে গেছে।
বিএনপির দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি দল ক্ষমতায় থেকে পাঁচবার দুর্নীতির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ৫ আগস্টের পর তাদের নতুন দুর্নীতির নমুনা দেখা গেছে। তারা দেশের মালিক মনে করে বালু খায়, পাথর খায়, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ সব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এখন তার প্রতিদান পাচ্ছে। আগামীতে একটি চাঁদাবাজ, দখলদার ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সাঁথিয়া উপজেলা উলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা আবু হানিফ এবং সঞ্চালনা করেন উলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুর রহিম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো. ইকবাল হোসাইন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ও জেলা উলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল গাফফার খান, সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোখলেছুর রহমান প্রমূখ।
রাকিব হাসনাত/এআরবি