নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবিতে অ্যাডভোকেসি সভা

কুড়িগ্রামে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে এক অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সদর অফিসার্স ক্লাবের ‘আলোর ভুবন’ মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করা হয়।
অ্যাক্টিভিস্টা কুড়িগ্রাম ও ডিস্ট্রিক্ট ক্লাইমেট নেটওয়ার্কের উদ্যোগে উদয়াঙ্কুর সেবা সংস্থা ও একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় আয়োজিত এই সভায় জেলার নয়টি উপজেলা থেকে প্রায় ৫০ জন ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক সদস্য এতে অংশ নেন।
সভায় বক্তারা বলেন, নদীভাঙনের কারণে কুড়িগ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর বসতভিটা ও জীবিকা হারিয়ে দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা এবং বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনায় স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রওশনআরা চৌধুরী বলেন, নদীভাঙনের কষ্ট যারা নিজেরা ভোগ করেননি, তারা বুঝবেন না। আমাদের বাড়ি চারবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। নারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাই কুড়িগ্রামে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি।
কুড়িগ্রাম প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বৈজ্ঞানিক জরিপ করে টেকসই বাঁধ নির্মাণে সরকারকে বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।

ডিস্ট্রিক্ট ক্লাইমেট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক এম. রশীদ আলী বলেন, প্রয়োজনে ছোট ছোট প্রকল্প না নিয়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য বাজেট নিশ্চিত করতে হবে।
অ্যাক্টিভিস্টা শিমু শেখ বলেন, নদীভাঙনের কারণে অনেক বাবা অল্প বয়সী মেয়েকে বাল্যবিয়েতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে শিশুর পেটে শিশু জন্ম নিচ্ছে। কিন্তু এই বিয়েগুলো টিকেও থাকছে না।
সভায় অতিথি হিসেবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মার্জান হোসেন ও উপসহকারী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া একশনএইড বাংলাদেশের ডেপুটি ম্যানেজার (পার্টনারশিপ অ্যান্ড প্রোগ্রাম) আরিফ সিদ্দিকী, উদয়াঙ্কুর সেবা সংস্থার প্রকল্প সমন্বয়কারী রবিউল ইসলামসহ অন্যান্যরাও অংশ নেন।
বক্তারা আরও বলেন, নদীভাঙনের ফলে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ছে এবং মেয়েশিশুদের বাল্যবিবাহের হার বাড়ছে। মানুষ এখন ত্রাণ নয়, নিরাপদ বসবাসের নিশ্চয়তা চায়। আর এর একমাত্র সমাধান হলো স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
মমিনুল ইসলাম বাবু/এআরবি