চাঁপাই-সোনামসজিদ মহাসড়ক প্রশস্তকরণে ব্যয় ৪৮১ কোটি টাকা

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদের সঙ্গে সংযুক্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের সর্বশেষ উন্নয়ন কাজ হয়েছিল ১৯৯০-এর দশকে। তখন সড়কটি ৬.২ মিটার প্রশস্ত করে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে এই সড়কে যানবাহনের চলাচল কয়েক গুণ বেড়েছে, যার ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে সড়কটির প্রশস্তকরণের কাজ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর জানিয়েছে, মহাসড়কটি প্রায় ২৮ বছর পুরনো এবং এর গড় প্রস্থ ৬ দশমিক ২ মিটার। সড়কটি এখন ১০ দশমিক ৩ মিটার পর্যন্ত প্রশস্ত করা হচ্ছে। মোট ৩১ দশমিক ৩ কিলোমিটার অংশে এই উন্নয়ন কাজ হবে। এর মধ্যে বারঘরিয়া বাজার (৩০০ মিটার), রানীহাটি বাজার (৫৫০ মিটার) ও শিবগঞ্জের ছত্রাজিতপুর বাজার (৪০০ মিটার) এলাকায় প্রায় ১.২৫ কিলোমিটার রাস্তাকে চারলেনে উন্নীত করা হবে, যা রিজিড পেভমেন্ট দিয়ে নির্মাণ করা হবে।
এ ছাড়াও শিবগঞ্জ উপজেলার বহলাবাড়ি ও বেঁকির মোড় এলাকার দুর্ঘটনাপ্রবণ দুটি বাঁক সরলীকরণ করা হবে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে কালভার্ট প্রশস্ত করা, দুটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ইন্টারসেকশন এবং বাস ও ট্রাকের জন্য পৃথক লেন নির্মাণ করা হবে।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে একনেক সভায় ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্তকরণ’ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩৪২ কোটি টাকা ব্যয় হবে সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণে, আর ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে।
সড়ক ব্যবহারকারীদের মতামতেও প্রশস্তকরণ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট। মহারাজপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। যদি পুরোটা চারলেন করা যেত, তাহলে আরও ভালো হতো। তবে এভাবে প্রশস্ত করলেও দুর্ঘটনা কিছুটা কমবে।
রামচন্দ্রপুর হাটের বাসিন্দা আব্দুল ওহাব বলেন, এই সড়কটি অনেক ব্যস্ত। দুই লেনের হওয়ায় এবং বেশি বাঁক থাকার কারণে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। চারলেন করলে যাত্রীরা আরও নিরাপদে চলাচল করতে পারত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ্ মো. আসিফ বলেন, সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে বারঘরিয়া বাজার থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিবগঞ্জের দুর্ঘটনাপ্রবণ বাঁকগুলোও সরল করা হবে। বারঘরিয়া, রানীহাটি ও ছত্রাজিতপুর বাজার এলাকায় রাস্তা হবে চারলেনের।
তিনি আরও বলেন, মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আমরা প্রথমে রাস্তার পাশে প্রশস্তকরণের কাজ করব। পরে মূল রাস্তার সংস্কার করা হবে, যাতে চলাচলে কোনো ভোগান্তি না হয়। আশা করছি, আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
আশিক আলী/এআরবি