অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক: সুন্দরগঞ্জে নতুন করে আক্রান্ত ৬

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় আবারও ছড়িয়ে পড়ছে অ্যানথ্রাক্সের আতঙ্ক। গত দুই দিনে সোমবার ও মঙ্গলবারে নতুন করে আরও ৬ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে একই উপজেলার রোজিনা বেগম নামে এক নারী অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১৬ জন অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৬ জন।
বেলকার কিসামত সদর গ্রামের অ্যানথ্রাক্স আক্রান্তদের কারও হাতে, আবার কারও দুই হাতেই ফোসকা উঠেছে। বিশেষ করে মোজাফফর আলীর বাম চোখ মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর আক্রান্ত গরু জবাই করার সময় আমি মাংস কাটতে সাহায্য করেছিলাম। দুই দিন পর বাম হাতে আর চোখে ফোসকা দেখা দেয়। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই, কিন্তু ভর্তি না নিয়ে শুধু প্রেসক্রিপশন দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। প্রতিদিন প্রায় ১০০ টাকার ওষুধ কিনে খেতে হচ্ছে। এখন রংপুরের এক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে চিকিৎসা নিচ্ছি।
একই গ্রামের নুরুন্নবী মিয়া ও নুর নাহার বেগম বলেন, ওষুধগুলো অনেক দামী, ২০ দিনের কোর্সে প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ হবে। আমরা চাই সরকারিভাবে ওষুধ সরবরাহ করা হোক।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন, যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই হালকা উপসর্গে ভুগছেন। সোমবার ও মঙ্গলবার থেকে নতুন ৬ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত মোট ১৬ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সবাইকে ১০ দিনের অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স দেওয়া হয়েছে, রোগী সাধারণত ১৫-২০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। একটি মেডিকেল টিম ইতোমধ্যে এলাকায় কাজ করছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দে বলেন, গরু ও ছাগলকে অ্যানথ্রাক্সের টিকা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকায় মাইকিং, উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। পরীক্ষায় দুইটি গরুর শরীরে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। ছয়টি মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছে।
রিপন আকন্দ/আরকে