ক্যান্সার আক্রান্ত স্বামী-স্ত্রীর বাঁচার আকুতি

এক সময় ছিল সুখ ও স্বচ্ছলতার জীবন। হঠাৎ নেমে আসে অসুস্থতার কালো ছায়া, বদলে যায় পুরো পরিস্থিতি। রাজধানীতে বসবাসকারী আয়েশা বেগম ও আব্দুল দাইয়ান এখন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার আনন্দ বাজার এলাকায় একটি পুরোনো টিনের ঘরে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। দুজনই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী।
সরু গলি পেরিয়ে গেলে চোখে পড়ে জরাজীর্ণ একচালা একটি টিনের ঘর। বাইরের অংশ ভাঙাচোরা, ভেতরটা প্রায় ফাঁকা। কোণায় এলোমেলো কাপড় ও পুরোনো ভাঙা ওয়ারড্রোব দেখে সহজেই বোঝা যায় এই ঘরে অভাব আর কষ্টই নিত্যসঙ্গী।
এক সময় ঢাকায় আয়-রোজগার করে নিশ্চিন্তে দিন কাটানো এই দম্পতি এখন বাঁচার জন্য লড়াই করছেন। কয়েক বছর আগেও আয়েশা বেগম ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। স্বামী আব্দুল দাইয়ান ছিলেন রিকশাচালক, পরে নিজেই রিকশার মালিক হন। কিন্তু হঠাৎ ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হন দাইয়ান, যার পরিণতিতে ভেঙে পড়ে সংসারের ভিত। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর আবার ব্রেন স্ট্রোক করেন তিনি। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন আয়েশা বেগমও। তার শরীরে ধরা পড়ে জরায়ু ক্যান্সার, সঙ্গে বাম কিডনিও বিকল হয়ে যায়।
দুজনের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পারায় বর্তমানে সব ধরনের চিকিৎসা বন্ধ। চিকিৎসকদের মতে, আয়েশা বেগমের ক্যান্সার এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে এবং সুস্থ হতে হলে অন্তত ৩৫টি কেমোথেরাপি প্রয়োজন। কিন্তু প্রথম থেরাপির পরই অর্থাভাবে চিকিৎসা থেমে যায়।
আয়েশা বেগম বলেন, চিকিৎসার জন্য অন্তত ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এখন আমরা কর্মহীন। আমরা দুজনই অসুস্থ। ছেলে অটোরিকশা চালিয়ে যে আয় করে, তা দিয়ে সংসারই ঠিকমতো চলে না। সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমার আকুল আবেদন- আমাদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করুন, যাতে নতুন করে বাঁচার সুযোগ পাই।
অসুস্থ আব্দুল দাইয়ানও বলেন, আমি অসুস্থ হওয়ার পর স্ত্রীর অসুস্থতায় সংসার পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। কেউ যদি সাহায্য করতেন, তাহলে হয়তো আবার চিকিৎসা শুরু করা যেতো।
আরও পড়ুন
দম্পতির ছেলে শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা এক সময় স্বচ্ছল ছিলাম। কিন্তু অসুস্থতার পর সবকিছু বদলে গেছে। ঢাকা ছেড়ে সোনারগাঁয়ে চলে এসেছি। এখন বাসা ভাড়া দেওয়ার সামর্থ্যও নেই। সামান্য জমি বন্ধক রেখে কিছুটা চিকিৎসা করিয়েছি। এখন জমিও ফেরানোর উপায় নেই। আমি চাই না আমার মা চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। সমাজের কাছে সাহায্য চাই।
এই দম্পতির চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে এখন জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। স্থানীয়দের মতে, সমাজের মানবিক ও সহানুভূতিশীল মানুষরা এগিয়ে এলে আয়েশা বেগম ও আব্দুল দাইয়ান নতুন করে জীবন ফিরে পেতে পারেন।
আব্দুল দাইয়ান ও আয়েশা বেগমের সাথে যোগাযোগের নম্বর ০১৯১২০২৪৬৯৩।
মীমরাজ হোসেন/এআরবি