ট্রলার ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা

মৎস্য অধিদপ্তরের ঘোষণায়, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রতি বছর অক্টোবর মাসে ২২ দিনের জন্য সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগের ফলে বর্তমানে সমুদ্রগামী জেলেরা মাছ শিকার থেকে বিরত রয়েছেন।
তবে এই অবসর সময়ে বসে নেই উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্যজীবীরা। বরং এই সময়টিকে কাজে লাগিয়ে তারা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নিজেদের ট্রলার ও নৌকা মেরামতের কাজে। অনেকে আবার ট্রলার রং করানো, জাল মেরামত, যন্ত্রাংশ ঠিক করার মতো কাজে মন দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) কলাপাড়া উপজেলার আলীপুর, মহিপুর ও কুয়াকাটা এলাকার বিভিন্ন জেলে পল্লী এবং ট্রলার মেরামতের ডগগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সংশ্লিষ্ট জেলে শ্রমিকরা দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে চলেছেন।
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রহিম খান বলেন, এই ২২ দিনের অবসর সময়টা আমাদের জন্য প্রস্তুতির সুযোগ। ট্রলার মেরামত, জাল ঠিক করা, ইঞ্জিন সার্ভিসিং সবকিছু করছি যেন নিষেধাজ্ঞা শেষে পূর্ণ উদ্যমে মাছ ধরতে যেতে পারি।
জেলে ছগির মাঝি বলেন, মাছ ধরতে না পারলেও এখন সময় পাই ট্রলার মেরামতের, পুরোনো জালগুলো ঠিক করার। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেই আবার সাগরে নামতে হবে, তাই সব কাজ গুছিয়ে নিচ্ছি।
আরও পড়ুন
জেলে নেতা নিজাম শেখ বলেন, অনেক জেলে কর্মহীন হয়ে পড়ায় আর্থিক সংকটে রয়েছেন। সরকারি সহায়তা হিসেবে চাল সরবরাহ করা হলেও তা অনেক সময় পর্যাপ্ত হয় না। আবার অনেক জেলেদের জেলে কার্ড না থাকায় তারা সরকারি সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা চাই, যারা সত্যিকারের জেলে পেশায় সম্পৃক্ত, তারা যেন সবাই জেলে কার্ডের মাধ্যমে সরকারি সহায়তা পায়।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এই পদক্ষেপের ফলে ইলিশের প্রজনন নিরাপদ হয় এবং পরবর্তীতে এর প্রভাব বাজারে ইলিশের সরবরাহ ও দামে ইতিবাচকভাবে পড়ে। তিনি কলাপাড়া উপজেলায় শতভাগ নিষেধাজ্ঞা পালনের বিষয়টিও নিশ্চিত করেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাউছার হামিদ বলেন, এই সময়কালে কেউ সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করায় সাময়িক কষ্ট হলেও দীর্ঘমেয়াদে মাছের উৎপাদন বাড়বে।
এসএম আলমাস/এআরবি