ফুটবল ম্যাচ শেষে খেলোয়াড় ও দর্শকদের মারামারি

ফেনী জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচের খেলা ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন খেলোয়াড় ও দর্শকদের মারামারির ঘটনা।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ফেনী সদর উপজেলা দলের সঙ্গে সোনাগাজী উপজেলা দলের কয়েকজন খেলোয়াড় ও দর্শকদের মধ্যে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে সোনাগাজী দলের অন্তত ৫-৬ জন দর্শক আহত হয়েছেন এবং তাদের বহনকারী সাতটি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে।
এদিন বিকেলে ফেনীর ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় ফুলগাজী ও সোনাগাজী টিম। এতে ফুলগাজীকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে সোনাগাজী। তবে খেলার পরে মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) অনুষ্ঠিতব্য ফেনী সদর ও ছাগলনাইয়ার মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচ স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সেমিফাইনাল ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সোনাগাজী ও ফুলগাজী দল মাঠ ছাড়ার সময় অনুশীলন করতে মাঠে নামে সদর উপজেলা ফুটবল দল। তখন সোনাগাজীর একজন দর্শকের সঙ্গে সদর উপজেলা দলের এক খেলোয়াড়ের কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। পরবর্তীতে সব খেলোয়াড়ের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সোনাগাজী উপজেলা দলের খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানালে মাঠে দুই দলের খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি, বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। প্রশাসন ও ম্যাচ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ঘটনাটি থেমে গেলেও সোনাগাজী উপজেলা দলকে বহনকারী গাড়িবহর শহরের রেলগেট এলাকায় পৌঁছালে তাদের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
সোনাগাজী দলের কোচ তারেক আজিজ বলেন, আমাদের খেলোয়াড়রা মাঠ ত্যাগের আগে সদর উপজেলা দলের খেলোয়াড়রা মাঠে অনুশীলনে প্রবেশ করে। তারা আমাদের দলের বিদেশি খেলোয়াড়দের ধাক্কা দেয়, দর্শকদের মারধর করে। পরবর্তীতে তাদের দলের অধিনায়ক অনিক বাঁশ নিয়ে এসে মারামারিতে জড়িয়ে যায়, সঙ্গে দলের কর্মকর্তারাও চড়াও হয়। এতে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি হয়। সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও ধাক্কাধাক্কির শিকার হন।
তিনি বলেন, প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও আমাদের দর্শক ও খেলোয়াড়দের বহনকারী গাড়ি রেলগেট এলাকায় পৌঁছালে সদর উপজেলা দলের অনুসারীরা আবারও হামলা চালায়। কয়েকটি গাড়ির কাচ ভেঙে ফেলে এবং বাস থেকে দর্শকদের নামিয়ে মারধর করে। এতে প্রায় ৫-৬ জন দর্শক আহত হন। বিষয়টি প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠেই দেখেছেন, আমরা মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা দলের ম্যানেজার কফিল উদ্দিন মামুন বলেন, যে অভিযোগগুলো করা হয়েছে, সেটি সত্য নয়। আমাদের দল ভালো অবস্থানে আছে বলে সেমিফাইনাল খেলার আগে কোনোভাবে বাদ দেওয়া যায় কি না, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি মাঠে গিয়েছিলাম খেলোয়াড় ও দর্শকদের মারামারি থামানোর জন্য, অন্য কোনো কারণ নেই। আমার খেলোয়াড়রা মারামারি করেছে সেটি সত্য, তবে কাউকে পাল্টা প্রতিরোধ করার জন্যই সেটি করেছে।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ম্যাচ শেষে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ঘটেছে। উপস্থিত খেলোয়াড় ও দর্শকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। গাড়িবহরে হামলার অভিযোগও পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করেছে।
তারেক চৌধুরী/আরকে