নোয়াখালীতে মহিলা জামায়াতের তালিমে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মহিলা জামায়াতের তালিমে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন দেওটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. রবিন। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের উত্তর দেওটি গ্রামের মাঈন উদ্দিন ব্যাপারীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের উদ্যোগে ওই বাড়ির উঠোনে তালিমের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শুরুর আগমুহূর্তে দেওটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. রবিন, শাহ আলম ও লিটনসহ কয়েকজন সেখানে গিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। অনুমতি ছাড়াই তালিমের আয়োজন করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। একপর্যায়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে চেয়ার ভাঙচুর ও অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রবিন মহিলা জামায়াতের এক কর্মীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘রাজনৈতিক তালিম এটা। রাজনৈতিক তালিম করতে আসছিস তোরা। তুই তালিম করতে আসছিস, তোর চোখ দেখা যায়, হাত দেখা যায়! শয়তান! তোর নিজের পর্দার ঠিক নাই, আরেকজনরে পর্দা করতে বলিস। তুই বাড়িতে আসছিস রাজনৈতিক আলাপ করতে।’
দেওটি ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমেরিকা প্রবাসী আবদুল ওয়াদুদের বাড়ির উঠানে মহিলা জামায়াতের তালিমের আয়োজন করা হয়েছিল। তিনি নিজেই আমাদের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তার অনুমতিতেই এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
দেওটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. ফরহাদ হোসেন সুজন বলেন, ওরা (জামায়াত) একটা বাড়িতে হঠাৎ করে ডেকোরেশনের চেয়ার নিয়ে আসছে এবং প্যান্ডেল সাজাচ্ছে। ওই বাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রবিন কেন এসব আনা হয়েছে জিজ্ঞেস করলে ওরা সেখানে মহিলা তালিম করবে বলে জানায়।
এদিকে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রবিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মহিলা তালিম তো সাধারণত ঘরের ভেতরে, পর্দার ভেতরে হয়। এভাবে বড় করে ডেকোরেশনের চেয়ার এনে তো মহিলা তালিম হয় না। হলেও তো বাড়ির লোকজনের জানার কথা। আমরা কেউ তো সেটা জানতাম না। আমাদের বাড়িতে আমাদের অনুমতি না নিয়ে এমন রাজনৈতিক আয়োজন করায় আমি প্রতিবাদ করেছি।
সোনাইমুড়ী উপজেলা জামায়াতের আমির মো. হানিফ বলেন, এ হামলা নারীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নগ্ন হস্তক্ষেপের জঘন্য উদাহরণ। নিরীহ নারী কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, গণতন্ত্র ও সহনশীলতার কোনো চর্চা তাদের মধ্যে নেই।
সোনাইমুড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, দেওটি এলাকায় মহিলা জামায়াতের অনুষ্ঠানে হামলার বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাসিব আল আমিন/আরএআর