গঙ্গাচড়ায় পানিবন্দি ২ হাজার পরিবার

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। নদীতীরবর্তী চরের প্লাবিত নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, আবাদি জমিসহ ধান ও পাটের খেত। আবারও ভাঙন ঝুঁকিতে বিনবিনার চর এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধটি।
সোমবার (২১ জুন) দুপুরে তিস্তা নদীবেষ্টিত গঙ্গাচড়ার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াতে অনেকেই উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
সরেজিমনে দেখা গেছে, উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, চরমটুকপুর, বিনবিনারচর এলাকার প্রায় ১২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। একই চিত্র লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, চরইচলী এলাকাতেও। সেখানে অন্তত ৬০০ পরিবার এবং গজঘন্টা ইউনিয়নের ছালাপাক ও জয়দেবসহ আশপাশের নিচু এলাকার ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দি বিনবিনারচর এলাকায় অনেকেই দেখা গেছে গবাদিপশু ও ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে রাস্তায় ও উঁচু স্থানে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যেতে। কেউ কেউ উঁচু স্থানে পরিবার নিয়ে অবস্থান করছেন। ইচলি এলাকায় তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমি ও খেত থেকে ধান কাটতে দেখা গেছে কৃষকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার (২০ জুন) রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিপৎসীমার কাছাকাছি পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার তিস্তার বেষ্টিত প্রায় পনেরোটি চরের অন্তত ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কথা জানিয়ে কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রাজু বলেন, ইউনিয়নের চিলাখাল, উত্তর চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনা মাঝের চর, সাউদপাড়া ও বাবুরটারী বাঁধেরপাড়, বিনবিনা এলাকায় হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদীও পানি বাড়ায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার ইউনিয়নের শংকরদহ, ইচলি, জয়রামওঝা ও বাগেরহাট এলাকায় ৬ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম জাকারিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার দুপুরে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে বিকেলে একটু কমতে শুরু করেছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর