দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সালমার পাশে দাঁড়ালেন ডিসি, দিলেন ল্যাপটপ

শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) তিনি প্রাইম ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্রী সালমা জেরিনের হাতে একটি ল্যাপটপ তুলে দেন।
বাবাহারা এই মেধাবী শিক্ষার্থীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। তার মা কিডনি রোগে আক্রান্ত। আর তিন ভাইবোনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ফলে পড়ালেখার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনা তাদের পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না।
সালমা জানান, অনলাইন ক্লাস, শ্রুতিলিপি লেখা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে একটি ল্যাপটপ তার জন্য অপরিহার্য ছিল। কিন্তু আর্থিক অক্ষমতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে সহযোগিতা চেয়ে ব্যর্থ হন। এরপর জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার মানবিক কার্যক্রমের কথা জেনে তিনি তার সঙ্গে দেখা করেন। ব্যস্ত সময়সূচির মধ্যেও ডিসি তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি আধুনিক ল্যাপটপ প্রদান করেন।
ল্যাপটপ হাতে পেয়ে সালমা জেরিন বলেন, আমাদের পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ। নিজের টাকায় ল্যাপটপ কেনা সম্ভব ছিল না। ডিসি স্যার যে ল্যাপটপ দিয়েছেন, তা আমার পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য আশীর্বাদ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সালমা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হয়েও ইংরেজি বিষয়ের মতো কঠিন বিষয়ে পড়াশোনা করছে এবং তার ফলাফল প্রশংসনীয়। সমাজে এমন শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তারা সমাজের বোঝা নয়, বরং সম্পদ। সালমা তুমি কখনো নিজেকে অসহায় ভাববে না, আমরা তোমার পাশে আছি।
একই অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক স্থানীয় সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে ব্যবহারের জন্য দুটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ও একটি প্রিন্টার প্রদান করেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মাদকবিরোধী গণসচেতনতা তৈরি ও প্রতিরোধে সাংবাদিকদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। পাশাপাশি সমাজের ইতিবাচক খবরগুলোও তুলে ধরতে হবে। বিদেশি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় নেতিবাচক খবর থাকে না আমাদেরও উচিত উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও মানবিকতার সংবাদ প্রচার করা।
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম, জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মীমরাজ হোসেন/আরএআর