অদম্য ইচ্ছায় কৃষকের ছেলে সোহেল বিসিএসের ইতিহাস বিভাগে প্রথম

অভাবের সংসারে বড় হয়েছেন সোহেল রানা। তবে সত্যিকার অর্থে বড় হতে দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমে ছিলেন অটুট। সেই শক্তিই তাকে এনে দিয়েছে সর্বোচ্চ সাফল্য। ৪৯ তম বিশেষ বিসিএসের ইতিহাস বিভাগে প্রথমস্থান অর্জন করেছেন তিনি।
টিউশন করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে শেষ পর্যন্ত হয়েছেন বিসিএস ক্যাডার।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে প্রকাশিত ৪৯তম বিশেষ বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে শিক্ষা ক্যাডারের ইতিহাস বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন নীলফামারী সদরের সোনারায় ইউনিয়নের কুখাপাড়া গ্রামের সোহেল রানা। তিনি স্থানীয় কৃষক আবু হোসেনের ছেলে।
সোহেল ২০১৪ সালে সোনারায় সংগলশী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫, এবং ২০১৬ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৪.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হয়ে ২০২০ সালে স্নাতক (সিজিপিএ ৩.৫৪) এবং ২০২১ সালে সিজিপিএ ৩.৫৬ নিয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
আবেগাপ্লুত হয়ে সোহেল রানা বলেন, “আল্লাহর রহমতে আমি বিসিএস ক্যাডার হয়েছি। এটা আমার জন্য ভীষণ পাওয়া। আমি সবসময়ই চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার জন্য। সবকিছুর পিছনে আমার পরিবার আমাকে সাহায্য করেছে। আমি গরীব পরিবারের সন্তান; আমার বাবা কৃষি কাজ করেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর আমার বাবা আমাকে ঠিকমতো পড়ালেখার খরচ দিতে পারতেন না। ভার্সিটিতে পড়ালেখা করা অবস্থায় আমি টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা চালিয়েছি সকলের দোয়ায় আজকে আমি বিসিএস ক্যাডার হয়েছি।”
সোহেলের বাবা আবু হোসেন বলেন, “আমি একজন কৃষক মানুষ, আমার ছেলে বিসিএস অফিসার হয়েছে এটা আমার জন্য স্বপ্নের মতো। আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ, তবুও কখনো ছেলেকে পড়ালেখা থামাতে বলিনি । আমার ছেলে ভালো কিছু করেছে এটা আমাদের জন্য গর্বের। আল্লাহ আমার ছেলেকে সবসময় ভালো রাখুক।”
সোহেল রানার শিক্ষক মমিনুর রহমান বলেন, “ছোটবেলা থেকে সোহেল খুব ভালো এবং মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। আমরা শিক্ষকরা তার এই অর্জনে খুবই খুশী। সোহেল তার কর্মজীবন নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করুক।”
এমটিআই