১৬৮ দিন পর খুলে দেওয়া হলো পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সিলগালা

দীর্ঘ ১৬৮ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের ভবন ও প্রধান ফটক দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ ইসলাম প্রেসক্লাবের সিলগালা খুলে দেন। এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে দীর্ঘদিন চলা দ্বন্দ্বের অবসান ঘটল।
গত ১০ নভেম্বর জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকের পর গঠন করা হয় ১৫ সদস্যের নতুন কমিটি। এতে সভাপতি হয়েছেন বাংলাভিশন ও দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক মোশারফ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সরকার হায়দার। এর মাধ্যমে প্রেসক্লাবকে ঘিরে চলা প্রায় ছয় মাসের জটিলতা নিরসন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে চলতি বছরের ২৯ মে সাংবাদিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে প্রেসক্লাব এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। সেদিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমন চন্দ্র দাস এ আদেশ জারি করেন। পরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে আদেশ পড়ে শোনান এবং ভবন ও ফটক সিলগালা করে দেন।
জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে প্রেসক্লাবে সদস্য অন্তর্ভুক্তি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ শহরের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয় এবং জনসমাগম, মিছিল ও সভা নিষিদ্ধ করা হয় ১৪৪ ধারার আওতায়। অবশেষে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যস্থতায় সব জটিলতার সমাধান হওয়ায় এখন স্বস্তি ফিরেছে সাংবাদিকদের মধ্যে।
পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সরকার হায়দার বলেন, অবশেষে আমাদের সমস্যা সমাধান হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের পর বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে প্রেসক্লাব খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে আমরা সবাই মিলে মিশে সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশনে কাজ করবো। সাংবাদিকদের প্রাণের এই প্রতিষ্ঠান আবারও পুরোদমে সক্রিয় হবে।
প্রেসক্লাবের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রেসক্লাব পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কারণে এটি বন্ধ ছিল। আজ সব সমস্যার সমাধান হয়েছে, প্রেসক্লাব খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন গণমাধ্যমকর্মীরা নিয়মিত এখানে আসবেন, বসবেন, কাজ করবেন। প্রেসক্লাব আবারও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
নুর হাসান/আরএআর