বিএনপি কর্মীর থাপ্পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু, থানায় অভিযোগ

ফরিদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা ধুলটপাড়া গ্রামে মো. সোহেল শেখ নামে এক বিএনপি কর্মীর মারধরে শামসুল শেখ (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে মৃত শামসুল শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী লিপি বেগম ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, শামসুল শেখের প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে রনি শেখ (৩২) কানাডায় এবং রাকিব শেখ রাজ (২৭) স্পেনে থাকেন। গত বছর রনি ফরিদপুর সদরের কানাইপুর এলাকার নাজমুল হাসানের দুলাভাইকে টাকার বিনিময়ে বিদেশে নেওয়ার কথা ছিল। তবে তিনি বিদেশে নিতে না পারায় নাজমুলের পক্ষ থেকে রনির পরিবারের ওপর টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল।
শামসুল শেখের প্রথম স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, নাজমুলের দুলাভাইকে বিদেশে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল আমার ছেলে রনি, কিন্তু পারেনি। এজন্য ওরা যে টাকা দিয়েছিল, তার চেয়েও বেশি টাকা ফেরত চাইছিল। সময়মতো টাকা দিতে না পারায় গতকাল শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে নাজমুল হাসান, এলাকার বিএনপি কর্মী মো. সোহেল শেখ, মনির পাটোয়ারী ও তুজাম শেখ বাড়িতে এসে আমাদের খুব গালিগালাজ করে। আমার স্বামী হার্টের রোগী ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। এই অবস্থায় সোহেল আমার স্বামী শামসুল শেখকে গালিগালাজ ও থাপ্পড় মারলে তিনি তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি অনুরোধ করলে তারা চলে যায়। পরে স্বামীর মাথায় পানি দিই, হাত-পায়ে তেল মাখাই। তবুও তিনি সুস্থ হচ্ছিলেন না। রাতে আরও খারাপ হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আজ (রোববার) ভোরে তার মৃত্যু হয়।
শামসুলের ছোট ছেলে স্পেনপ্রবাসী রাকিব শেখ হোয়াটসঅ্যাপে বলেন, আমাদের কাছে ওরা যে টাকা পেত, তা অনেক আগেই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি কর্মী সোহেল ৬ মাস আগে জোর করে আমার বাবার কাছ থেকে একটি সাদা স্ট্যাম্পে সই নেয়। এরপর আবার নতুন করে ৬ লাখ টাকা দাবি করে। আমরা দুই ভাই বিদেশে থাকি, আর আমাদের পরিবার নীরব চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছিল। ওরা ক্ষমতাশালী হওয়ায় কিছু বলতে পারছিলাম না। স্ট্যাম্পে সই নেওয়ায় টাকা না দিয়ে উপায়ও ছিল না।
চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ত.ম. মাসুদ পারভেজ বলেন, বিদেশে পাঠানো নিয়ে তাদের মধ্যে টাকা লেনদেন ছিল। কিন্তু কারও বাড়িতে গিয়ে মারধর করা বেআইনি। নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে। পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম বলেন, নিহতের স্ত্রী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জহির হোসেন/এআরবি