তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালে জনগণ দেশের মালিকানা ফিরে পেয়েছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের মাধ্যমে জনগণ দেশের মালিকানা ফিরে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়ছার কামাল।
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশের মানুষের বহু প্রতিক্ষিত রায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল। ২০১১ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলোপ করা হয়েছিল, তখন সারা বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ মানুষ চেয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের বতর্মান পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা ওয়াজেদ তার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করে। তিনি চিন্তা করলেন যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকে তাহলে হয়তো তার মসনদ টিকে থাকতে নাও পারে। যে কারণে আদালতের মাধ্যমে তিনি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলোপ করলেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ধীতপুত বনমালী মন্দিরে উঠান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার কায়ছার কামাল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে দেশের মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, জীবন দিয়েছে শত সহস্র নেতাকর্মী। অনেকেই ক্রসফায়ার, গুম খুনসহ জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তথা ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্রের জন্য। গতকাল (২০ নভেম্বর) ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে স্মরণীয় একটি দিন। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেড ডিভিশন রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করেছেন। আমরা মনে করি দেশের মালিক জনগণ মালিকানা ফিরে পেয়েছে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের মাধ্যমে।
পলাতক শেখ হাসিনার রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। আমারা মনে করি মানবতাবিরোধী আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে কার ফাঁসি হয়েছে সেটা দেখতে চাই না। দুই হাজার নেতাকর্মী দেড় মাসে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার শিকার পরিবারগুলো তাদের বিচার পেয়েছে। এই ন্যায়বিচারে কারো ফাঁসি হয়েছে, কারো কারাদণ্ড হয়েছে। আমি দাবি করছি- জুলাই আন্দোলনসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যারা হত্যার শিকার হয়েছে, তাদের পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।
দেশকে চাইলেই অস্থিতিশীল করা যায় না জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ, গুটি কয়েক মানুষ দেশকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সব সময় শান্তি, ন্যায় ও গণতন্ত্রের পক্ষে। দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষকে নিয়ে গুটিকয়েক দুস্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেবে ইনশাআল্লাহ।
পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, পোগলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহাবুব জামিল রিপন, সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, উপজেলা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোকশেদ উদ্দিন খান প্রমুখ।
এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন ব্যারিস্টার কায়ছার কামাল। তিনি সুযোগ পেলে অবহেলিত কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার অবকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর