ঠাকুরগাঁওয়ে সার বিতরণের সময় মারধরের শিকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় সার বিতরণের সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় মারধরের শিকার হয়েছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার উমরাডাঙ্গী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, মল্লিক ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মোজাম্মেল হোসেনের তত্ত্বাবধানে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকতারুল ইসলামের উপস্থিতিতে কৃষকদের মধ্যে সার বিতরণ চলছিল। এ সময় তিনটি ভ্যানগাড়িতে করে ৩৩ বস্তা সার নিয়ে যাচ্ছিলেন পাঁচজন কৃষক। এতে সার নিতে আসা অন্য কৃষকেরা বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মুহূর্তেই পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে ওঠে। হট্টগোল বাড়তে থাকায় আকতারুল ইসলাম দুপুরের খাবারের কথা বলে ঘটনাস্থল ছাড়তে চাইলে পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম তাকে সঙ্গে নিয়ে ফের বিতরণ স্থলে আসেন। তখন উপস্থিত লোকজন আকতারুল ইসলামের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। এতে তার দাঁত ভেঙে যায় এবং মাথায়ও গুরুতর আঘাত লাগে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাণীশংকৈল উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
স্থানীয়রা জানান, সার বিতরণের শুরু থেকেই বাজার এলাকায় অস্বাভাবিক চাপ ছিল। সকাল থেকে কৃষক সার নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ দেখা যায়, ভ্যানগাড়িতে করে কয়েকজন কৃষক একসঙ্গে অনেক বস্তা সার নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এতে লাইনে দাঁড়ানো লোকজনের মনে হয় সার বুঝি শেষ হয়ে যাবে বা কাউকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, সকালে শান্তভাবেই সার দিচ্ছিল। পরে দেখি কয়েকজন একসঙ্গে বস্তা তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে। তখন লাইনে থাকা লোকজন চেঁচামেচি শুরু করে। সবাই রেগে যায় কে আগে সার পেল, কে না পেল এই নিয়ে।
স্থানীয় মোতালেব আলী বলেন, আমরা দেখি কৃষি কর্মকর্তারা চেষ্টা করছিল পরিস্থিতি সামাল দিতে। কিন্তু ভিড় এত বেশি, আর মানুষের রাগ এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, কেউ একজন কথা কাটাকাটি করতে গিয়েই মারামারির বেধে গেল। তারপর মুহূর্তেই সব গরম হয়ে যায়।
আরেক স্থানীয় মিজান বলেন, কেউ ইচ্ছা করে মারধর করবে এমন মনে হয় না। কিন্তু যে ভিড়টা তৈরি হয়েছিল, তাতে ঠেলা ধাক্কা, উত্তেজনা মিলেই পুরো ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কর্মকর্তার দাঁত ভেঙে যাওয়া খুবই দুঃখজনক। এটা না হলেই ভালো ছিল।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো নয়। মাথায় জখম হয়েছে, দাঁত ভেঙে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুরে নিয়ে যাচ্ছি। চিকিৎসা শেষে ভুক্তভোগীর মতামত অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেদওয়ান মিলন/এমএন