এএসআইয়ের বিরুদ্ধে চাচাতো ভাইকে পিটিয়ে ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ছুটিতে বাড়ি এসে নিজের চাচাতো ভাই মোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তার ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার ঘাগড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত মোফাজ্জল হোসেন বর্তমানে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগীর বোন মোছা. সালমা আক্তার (৪০) বাদী হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজ উদ্দিনের বড় ছেলে। বর্তমানে তিনি শরীয়তপুর জেলা পুলিশে কর্মরত।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে মোফাজ্জল হোসেন তার ছোট বোনের বাড়ি (হোসেন্দী কুমারপুর) থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য নগদ ৫ লাখ টাকা নিয়ে বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে চন্ডিপাশা মোড় সংলগ্ন সল্লু উদ্দিনের দোকানের সামনে পৌঁছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা বিবাদী আরিফুল ইসলাম (৩৫) ও ফয়েজ উদ্দিন (৫০) অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে সঙ্গে নিয়ে তার পথরোধ করে। হামলাকারীরা মোফাজ্জলকে সাইকেল থেকে ফেলে দিয়ে লাথি ও ঘুষি মারে। একপর্যায়ে বিবাদী আরিফুল ইসলাম ভুক্তভোগীর কোমরে থাকা ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন। ধস্তাধস্তির সময় আরিফুল হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে মোফাজ্জলের মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাম চোখের নিচে ও নাকের ওপরে লাগে, এতে তিনি গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। এছাড়া অপর বিবাদী ফয়েজ উদ্দিন ভুক্তভোগীর বাম কানে কামড় দিয়ে জখম করে। আহত মোফাজ্জলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে অটোরিকশা যোগে পাকুন্দিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার চোখের ওপরে তিনটি সেলাই দেন। বর্তমানে তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোফাজ্জল জানান, তাকে মারধর করতে করতে আরিফুল বলেন— ‘আমি পুলিশ, মারলেও আমাদের কোনো বিচার নাই।’ হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও তিনি আতঙ্কে কাঁপছিলেন।
তিনি বলেন, সে পুলিশের লোক যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো বিষয়ে আমাকে বেকায়দায় ফেলে দেবে। এমনকি আমার প্রবাসে যাওয়ার জমানো টাকাও কেড়ে নিয়েছে।
তার বড় বোন সালমা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে পুলিশ জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, সেই পুলিশই যদি তাদের ওপর হামলা চালায়, তাহলে তারা বিচার পাবে কোথায়। অভিযোগ দেওয়ার পরও তারা ভয়ে আছেন— ডিপার্টমেন্ট বিষয়টি আমলে নেবে কিনা তা নিয়েও তাদের শঙ্কা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে এএসআই আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধান হবে। এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস. এম. আরিফ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এক কর্মকর্তা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন, তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/আরএআর