‘বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দেশের জন্য চরম লজ্জার’

রংপুরের তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা শ্রী যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে নির্মমভাবে নিজ বাড়িতে হত্যার চার দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আসামি শনাক্ত করতে পারেনি। দ্রুত আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে তারাগঞ্জ উপজেলা চত্বরের পাশে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবার, যুবসমাজ, রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাতে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে তারা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রংপুর জেলার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান প্রামানিক লেবু, সদস্য সচিব ফজলার রহমান, আলী হোসেন ও রেজাউল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রংপুর জেলার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী বলেন, বিজয়ের মাসে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে বাড়ির ভেতর হত্যা করা দেশের জন্য চরম লজ্জার। হত্যাকাণ্ডের চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই পুলিশ প্রশাসনের। তারা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তারাগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় দেশ স্বাধীন করতে জীবন বাজি রেখেছিলেন। অথচ শেষ বয়সে এমন নৃশংস পরিণতি- এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে বিলম্ব হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। আশা করছি খুব দ্রুত খুনের রহস্য উন্মোচন হবে। খুনি যেই হোক পার পাবে না।
গত শনিবার রাতে তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী সুর্বণা রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রোববার সকালে প্রতিবেশিরা ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে তাদের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এ ঘটনায় তাদের বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর