যশোর কারাগারে ‘উদ্ভাবকের’ আত্মহত্যা

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত এক কয়েদির আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আত্মহননকারী মিজানুর রহমান শার্শা উপজেলার আমতলা গ্রামের আক্কাচ আলীর ছেলে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মধ্যে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। তিনি মেকানিক মিজান নামে পরিচিত। উদ্ভাবনায় মিজান একাধিকবার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন।
কারা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে কার্পেট চত্বরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করেন মিজান। সেখানে তিনি আত্মহত্যা করেন। কর্তব্যরত কারারক্ষীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেন। তবে ততক্ষণে তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবিদ আহমেদ জানান, চলতি বছরের ২৪ জুলাই একটি হত্যা মামলায় তিনি কারাগারে আসেন। তিনি মূলত কপোতাক্ষ-৩ ভবনে থাকতেন। কিন্তু কৌশলে তিনি কার্পেট চত্বরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে যান। সেখানেই এই ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, উদ্ভাবক মিজানুর রহমান যশোরের শার্শার মোটরসাইকেল মেকানিক। শার্শা বাজারে তার একটি মোটরসাইকেল মেরামতের দোকান রয়েছে। মিজান বহু উদ্ভাবনী যন্ত্র যেমন- বিদ্যুৎ উৎপাদন, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, প্রতিবন্ধীদের জন্য যানবাহন তৈরি করেছেন। বানিয়েছে দেশি প্রযুক্তির অ্যাম্বুলেন্স। পথশিশু ও মানসিক প্রতিবন্ধীসহ দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে 'খাবার বাড়ি' প্রতিষ্ঠা করে গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন মিজানুর। পরে নিজ খরচে হযরত শাহজালাল (রা.) শ্যামলাগাছি লতিফিয়া এতিমখানা ও মাদরাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে লাইভ করে তাকে অর্থ কালেকশন করে দেখা যেতো।
যশোরের বেনাপোলে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক সুজায়েতুজ্জামান প্রিন্সকে হত্যার ঘটনার ২১ বছর পর গত ২৪ জুলাই উদ্ভাবক মিজানুর রহমান মিজানসহ চারজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। উদ্ভাবক মিজান হত্যার শিকার প্রিন্সের আপন ভগ্নিপতি ছিলেন।
রেজওয়ান বাপ্পী/এএমকে