শহীদ মিনারের আলপনা সরাল প্রশাসন, ঢেকে দেওয়া হলো দেয়াল

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক গ্রাফিতি মুছে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দেয়ালে শৈল্পিক আলপনা আঁকা হয়েছিল। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিষয়টি নজরে আসার পর জেলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এর ফলশ্রুতিতে সন্ধ্যা ৭টায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান আলপনাগুলো সরিয়ে ফেলতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এটি নেগেটিভ কিছু নয়, যারা এঁকেছেন তারাই জানেন কেন এঁকেছেন। আলপনাগুলো মুছে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরই দেয়ালের আলপনাগুলো মুছে ফেলার কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি দেয়ালগুলো সাদা ও লাল রঙের কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে স্থানীয় সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী আব্দুর রশিদ মানিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের কোনো স্মৃতি না থাকায় বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে, এজন্য সাধুবাদ জানাই। আশা করছি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধারণ করে এমন কিছু আমরা শিগগিরই দেখতে পাব।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এই তোপধ্বনি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
সকাল ৮টায় বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল আয়োজন। এ সময় কক্সবাজারের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শিত হবে।
দুপুর ১২টায় বিয়াম আঞ্চলিক কেন্দ্রে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। বিকেল ৩টায় বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে প্রীতি ফুটবল ও ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে সার্ফিং ও জেটস্কি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় সৈকতের লাবণী পয়েন্টে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং তিন দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি আরও বর্ণিল হয়ে উঠবে। রাতে উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
ইফতিয়াজ নুর নিশান/এআরবি