রাতের আঁধারে কৃষকের ১১৭টি আমগাছের চারা কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

সারি সারি আমগাছে নতুন মুকুলের কুঁড়ি ধরার কথা ছিল। কিন্তু তার বদলে গোড়া থেকে কেটে ফেলা হয়েছে আমগাছের চারাগুলো। এখন মাটিতে ছড়িয়ে থাকা ডালপালা আর পাতার স্তূপ পড়ে আছে রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার কাজীপাড়া এলাকায় এক কৃষকের বাগানে।
রাতের আঁধারে পরিকল্পিতভাবে কৃষক সাইদুর রহমান ১১৭টি আমছের চারা কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজের আমবাগানে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে পড়েন তিনি। দুই বছরের শ্রম, স্বপ্ন ও বিনিয়োগে গড়ে তোলা ওই আমবাগান ধ্বংসের ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, দুই বছর আগে সাড়ে ১৫ শতক জমিতে ১৩৩টি উন্নত জাতের আমগাছ রোপণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল বারোমাসি, কাটিমন, আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা, গৌড়মতি ও বারি-৪ জাতের আমগাছ। শুরু থেকেই নিয়মিত সেচ, সার প্রয়োগ ও রোগবালাই দমনে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এ বছর ফল বিক্রির আশায় ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগে আমগাছের চারার সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে প্রায় ৬০ কেজি রসুনের বীজ রোপণ করেছিলাম। ১৩৩টি গাছের মধ্যে ১১৭টি কেটে ফেলা হয়েছে। তার দাবি, গাছ, পরিচর্যা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি থানায় জানানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, গাছের সঙ্গে শত্রুতা থাকা উচিত নয়। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা শুধু একজন কৃষকের ক্ষতি নয়। এটি এলাকার কৃষি উৎপাদন ও পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
কাজীপাড়া এলাকার কৃষক ইশা খান বলেন, এটা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। একজন কৃষকের জীবনের সঙ্গে এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আজ সাইদুর রহমান, কাল অন্য কেউ- এভাবে চলতে থাকলে কৃষিকাজে মানুষ আগ্রহ হারাবে।
পবা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তারা এখনো মামলা করেনি। পূর্ব শত্রুতা ও জমি বিরোধসহ সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে। যার গাছ কেটেছে তিনি ভালোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছি।
শাহিনুল আশিক/আরকে