মরিচের কেজি ১৫ টাকা, নষ্ট হচ্ছে জমিতে

কুড়িগ্রামে এবার ব্যাপক পরিসরে মরিচের চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও দ্বিগুণ মরিচ উৎপাদন হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাব ও উৎপাদন ভালো হওয়ার কারণে বর্তমানে প্রতি মণ মরিচ ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে কঠোর বিধিনিষেধে মরিচ বাজারজাত করতে না পারায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক কৃষক জমি থেকে মরিচ তুলছেন না, খেতেই মরিচ পেকে নষ্ট হচ্ছে। তারা বলছেন, এক মণ মরিচ তুলতে ব্যয় হয় ২০০ টাকা। আর বাজারে প্রতি মণ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। তাহলে আমাদের কি থাকল। অথচ এখন মরিচ ৪-৫ হাজার টাকা মণ বিক্রি হওয়ার কথা ছিল।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রার থেকে আবাদ হয়েছে ৯২০ হেক্টর জমিতে।
কৃষি অফিস বলছে, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে মরিচের উৎপাদন ব্যাপক হয়েছে। এ কারণেই মূলত দামটা কমে গেছে। মরিচের গাছ যদি মরে না যায়, তাহলে কৃষকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
মরিচ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয় প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমিতে মরিচ উৎপাদন হবে ৪০-৪৫ মণ। মরিচের চারা বপন করা থেকে পরিপক্ক হতে সময় লাগে প্রায় ৪-৫ মাস।
কুড়িগ্রাম সদর কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের খালিসা কালোয়া গ্রামের মরিচ চাষি মো. সোহেল রানা বলেন, দুই বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করছি। বাজারে মরিচের যে দাম, এই দামে বিক্রি করে ভ্যানগাড়ি ও কামলাকে দিতেই সব টাকা শেষ। মরিচ বিক্রির টাকা দিয়ে মাছ কিনব কি করে। সরকার জেলায় জেলায় লকডাউন দিছে, মরিচ তো আর অন্য জেলায় পাঠাতে পারছি না। এত মরিচ এখন কে খাবে।
ওই গ্রামের শ্যামলী নামে এক নারী বলেন, এক বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করছি। বাজারে মরিচের দামে নেই। ৬০০-৭০০ টাকা মণ। এক মণ মরিচ তুলতে কামলাকে দিতে হয় ২০০ টাকা। এবার এত টাকা খরচ করে মরিচ আবাদ করে বড় বিপদে পড়লাম। মরিচের দাম নেই, তাই জমি থেকে মরিচ তুলছি না। পেকে পেকে নষ্ট হচ্ছে জমিতেই।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও দ্বিগুণ মরিচের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কারণে ফলনও ভালো হয়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়ায় মূলত দামটা একটু কম। তবে মরিচের গাছ মরে না গেলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
জুয়েল রানা/এসপি