তিন দিনের বিজয় মেলা ‘এক বেলায়’ শেষ

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলা শেষ হয়েছে মাত্র ‘এক বেলায়’। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনাড়ম্বর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা পরিণত হয় দায়সারা আয়োজনে। মেলায় স্টল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত সীমিত।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বাগাতিপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিজয় মেলার আয়োজন করে বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রশাসন। প্রথম দিনই মেলার মাঠে ১০টি স্টলের মধ্যে ২টি স্টল ফাঁকা ছিল। শিক্ষার্থীদের প্যারেড শেষ হওয়ার পর দুপুর গড়াতেই পুরো মেলার মাঠ প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। তিন দিনব্যাপী মেলার আয়োজনে কার্যত ভাটা পড়ে এক বেলাতেই। সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।
পরদিন (১৭ ডিসেম্বর) মেলার ১০টি স্টলের মধ্যে ৯টিই ছিল ফাঁকা। কেবল একটি স্টলে একজন স্থানীয় উদ্যোক্তা উপস্থিত ছিলেন। তবে স্টলে বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বিকেল গড়াতেই তিনিও স্টল ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর পুরো মেলার মাঠই ফাঁকা হয়ে যায়।
মেলায় অংশ নেওয়া স্থানীয় উদ্যোক্তা আইভি খাতুন জানান, আয়োজন জাঁকজমকপূর্ণ না হওয়ায় এবং প্রচারণা কম থাকায় মেলায় অংশ নিতে উদ্যোক্তাদের আগ্রহ কম ছিল। উপজেলা প্রশাসনের অনুরোধে প্রথম দিন তারা মেলায় অংশ নিলেও পরদিন থেকে অনেকে আর আসেননি। পাশাপাশি বিদ্যুৎ না থাকাসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কথাও জানান তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মহান বিজয় দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবসকে ঘিরে এমন দায়সারা আয়োজন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরাদ্দকৃত অর্থ লোপাট করতেই পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের আয়োজন করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, আমিও তিনদিন ব্যাপী মেলার কথা শুনেছি। তবে মেলায় অনেক অব্যবস্থাপনার কথা শুনছি। বিজয় দিবসের মতো গুরুত্বপুর্ণ জাতীয় দিবসের আয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের আরও তৎপর ও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, অনাড়ম্বরভাবে মেলা আয়োজনের সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল। যারা দোকান নিয়ে এসেছিল তাদের দুপুরের খাবার এবং যাতায়াত ভাড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কিন্তু বেচা বিক্রি না থাকায় তারা দোকান নিয়ে আসেনি। আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না।
আশিকুর রহমান/এমএএস