নিহত দীপু দাসের পরিবারের পাশে ডিসি, সহযোগিতার আশ্বাস

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে উত্তেজিত জনতার হাতে নিহত দীপু চন্দ্র দাসের (২৮) বাড়ি পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সাইফুর রহমান। এ সময় তিনি নগদ অর্থ সহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের দীপু দাসের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ ২৫ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, শুকনো খাবার এবং একটি সেলাই মেশিন দীপুর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দীপুর স্ত্রীকে সরকারি সব ধরনের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান বলেন, নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি সরকারি সব ধরনের সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছে। মোটকথা আমরা এই পরিবারটির পাশে আছি।
এ সময় তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নিহতের বাবা রবি চন্দ্র দাস জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল দীপু। তাকে এভাবে মারা হবে কোনো দিন ভাবতেও পারিনি। আমার ছেলের কী দোষ ছিল? ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করলে দেশে তো আইন ছিল। সেই আইনে তো বিচার হতো। আমরা গরিব তাই ছেলের জীবন রক্ষা করতে পারিনি। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
নিহতের স্ত্রী মেগনা রানী বলেন, আমার একমাত্র সন্তান বাবা হারা হয়েছে। অভাবের সংসারে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো ভেবে পাচ্ছি না। হত্যার যেন বিচার হয়- রাষ্ট্রের কাছে এটাই চাওয়া।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দীপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তার মরদেহ বিবস্ত্র করে গাছে ঝুলিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
নিহত দীপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ২ বছর ধরে ভালুকার জামিরদিয়া পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।
আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর