তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, ঢাকায় যাবেন যশোরের অর্ধলক্ষ নেতাকর্মী

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে যশোর থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন অর্ধলক্ষ নেতা-কর্মী। জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ৫০০ জন করে নেতা-কর্মী ঢাকায় গিয়ে প্রিয় নেতাকে বরণ করে নেবেন। যশোরের আটটি উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ৯৩টি।
জেলা বিএনপি সূত্র আরও জানায়, এ যাত্রার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পরিবহন ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়নি। তবে দফায় দফায় ঢাকাগামী ট্রেনের টিকিট কেটে তা নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সবাই নিজ নিজ উদ্যোগে ঢাকায় পৌঁছাবেন বলেও জানানো হয়েছে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা জানান, বিএনপির পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাই ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান বিদ্যুৎ ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারেক রহমানকে এ প্রজন্মের কেউ সরাসরি দেখেননি। গত ১৭ বছর ধরে তারা শুধু ভার্চুয়ালি তার বক্তব্য শুনেছেন। সেই নেতাকে সামনাসামনি এক নজর দেখতে সবাই ঢাকায় ছুটছেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব রাজিদুর রহমান সাগর ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্ধারিত দিনের আগেই জেলার সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকার ৩০০ ফিট এলাকায় পৌঁছাবো। সারা বাংলাদেশ তারেক রহমানের জন্য অপেক্ষা করছে।
জেলা যুবদলের সদস্যসচিব আনসারুল ইসলাম রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলার আটটি উপজেলা থেকে প্রায় ৩০ হাজার যুবদলের নেতাকর্মী ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। তারা কীভাবে ঢাকায় পৌঁছাবেন, সে বিষয়ে একটি রোডম্যাপ ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রিয় নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সারা দেশেই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দেশনায়ক তারেক রহমানকে এক নজর দেখতে ইতোমধ্যে আমাদের অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। নেতাকর্মীরা যেন নির্বিঘ্নে ঢাকায় যেতে পারেন, সে জন্য বাস, মাইক্রোবাস, ট্রেন ও প্রাইভেটকার ভাড়া করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই উপজেলা থেকে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন।
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঝিকরগাছা-চৌগাছা আসন থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীকে ঢাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ঢাকার রাজপথে উপস্থিত থাকব।
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ঢাকা পোস্টকে বলেন, যশোরের প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে অন্তত ৫০০ জন করে নেতাকর্মীকে ঢাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এর চেয়েও বেশি সংখ্যক মানুষ তারেক জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকায় অবস্থান নেবেন। ইতোমধ্যে যশোর জেলার সব বাস ভাড়া হয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। শুধু বাস নয়, ট্রাক, মাইক্রোবাস, ট্রেন, প্রাইভেটকার এমনকি মোটরসাইকেল করেও আমাদের নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত সাংবাদিকদের বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আগমনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। নেতাকর্মীরা বাস, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি যেসব এলাকায় ট্রেন যোগাযোগ আছে, সেসব এলাকা থেকে ট্রেনের মাধ্যমেও ঢাকায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন। ইতোমধ্যে কিছু নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ঢাকা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন বলেও তিনি জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুলনা বিভাগ থেকে ঠিক কত মানুষ ঢাকায় যাবেন, তার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা সম্ভব নয়। তবে প্রত্যেক ইউনিট নিজ নিজ উদ্যোগে যানবাহন বুক দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকার কারণে তিনি জানেন, সবাই বর্তমানে তীব্র যানবাহন সংকটে ভুগছেন। যানবাহন জোগাড় করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার ধারণা, এমন জনসমাগম হবে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে কেউ প্রত্যক্ষ করেনি।
প্রায় দেড় যুগের নির্বাসিত জীবন শেষে লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় আসবেন তারেক রহমান। বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে তিনি রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। এরপর বনানী-কাকলী হয়ে ৩০০ ফিট এলাকায় যাবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সেখানে প্রস্তুতকৃত মঞ্চে উপস্থিত হয়ে তিনি বক্তব্য দেবেন।
রেজওয়ান বাপ্পী/এআরবি