হেলমেট পরে এসে গুলি, ১৮ দিন পর মারা গেলেন যুবদল নেতা

কক্সবাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত হওয়ার ১৮ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার সদরের পশ্চিম লারপাড়া এলাকার একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত যুবদল নেতা মোহাম্মদ ফারুক (৩৪), কক্সবাজার বৃহত্তর বাস টার্মিনাল যুবদল ইউনিটের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং স্থানীয় কবির আহমেদ ছেলে। রোববার সকালে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হলে বিকেলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে আনার পর ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
গত ৯ ডিসেম্বর রাত ৮টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজার শহরের বাইপাস সড়কে হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা ফারুক ও তার দলের একই শাখার সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামকে গুলি করে পালিয়ে যায়। আহত সাইফুল ইসলাম এখনো চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীদের দাবি পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুর্বৃত্তরা তাদের উপর পরিকল্পিত হামলা করে। কক্সবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি সৈয়দ আহমদ উজ্জ্বল বলেন, তিন বছর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে গুলিবিদ্ধ সাইফুলের আপন ভাই সাইদুল ও চাচাতো ভাই কায়সারকে হত্যা করা হয়, ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিরা সাইফুলের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত। যারা ৯ ডিসেম্বর রাতে সাইফুল ও ফারুককে গুলি করেছে।
এই ঘটনায় গত ১০ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে ১৯ ডিসেম্বর ভোরে
পুলিশ মামলার ৫ আসামিকে লামার মাতামুহুরি রিভার ভিউ রিসোর্ট থেকে পর্যটক বেশে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কামরুল হাসান বাবু (২৬), ইমরান উদ্দিন খোকা ওরফে আরিয়ান খোকা (২৫), আব্দুল কাইয়ুম (৩৩), মো. সাকিব (২০) এবং মাসুদ হাসান বকুল (১৮)। তাদের সবার বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের পূর্ব লারপাড়া এলাকায়, বর্তমানে তারা কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি আছেন।
পুলিশের তদন্ত সূত্র বলছে, হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ৭.৬৫ ক্যালিভারের বুলেট সম্বলিত বিদেশি পিস্তল। নিহত ফারুক কোমরের নিচে ও পিঠে দুটি বুলেটবিদ্ধ হয়েছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কথিত শুটার হিসেবে কামরুল হাসান বাবুর এঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তরে আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমি উদ্দিন।
তিনি বলেন, পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তৎপরতা অব্যাহত রাখে এবং ৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয়। বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
ইফতিয়াজ নুর/আরকে