কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টিতে পাটচাষিদের স্বপ্ন ভঙ্গ

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এখানকার পাট চাষিরা।
জানা গেছে, বন্যার আশঙ্কায় আগাম জমি থেকে পাট কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা। আবার অনেক এলাকায় ভারি বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে পাটগাছ জমিতে পড়ে গেছে। তাই পরিপক্ব না হতে আগাম পাট কেটে নেওয়ায় বিঘাতে ৩-৪ মণ ফলন কম হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। এর মধ্যে শুধু রাজিবপুর উপজেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে।

পাটচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে পাট বপন করা থেকে শুরু করে পরিপক্ক হতে সময় লাগে প্রায় ৪ মাস। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদন হয় ১০-১২ মণ। বর্তমানে প্রতি মণ পাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকা দরে। এক বিঘা জমিতে পাটচাষে সব মিলে ব্যয় হয় ৬-৭ হাজার টাকা। জমি থেকে আগাম পাট কাটার কারণে বিঘাতে ৩-৪ মণ পাট কম হতে পারে।
রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাব খা গ্রামের পাটচাষি মামুন বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে বড় সমস্যা হচ্ছে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে আগাম পাট কাটতে হয়েছে। এখন বিঘাতে ৩-৪ মণ পাট কম হবে। পাট কম হওয়ার কারণ ঠিকমতো পরিপক্ব না হওয়া।
ওই গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে পাটের চাষ করছি। টানা বৃষ্টির কারণে পাট জমিতে পড়ে গেছে। তাই আমিও আগাম পাট কেটেছি। তিনি বলেন, এখন না কাটলে পাট জমিতে নষ্ট হবে। পরে বেশি টাকা খরচ করে আবার পাট কাটতে হবে। তাই ফলন কম হলেও কেটে নিয়েছি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, আমাদের হিসেব অনুযায়ী পাট পরিপক্ব হয়েছে। পাট এখন কাটলেও কোনো সমস্যা নেই। পাটচাষিদের ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। এখনো সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে। তবে কিছু সবজি খেতের ক্ষতি হতে পারে।
জুয়েল রানা/এসপি