রাজশাহী রেশম কারখানার উৎপাদন শুরু

এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বস্ত্র উৎপাদনে গেল রাজশাহী রেশম কারখানা। রোববার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) ফিতা কেটে বস্ত্র উৎপাদনের উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহসভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আবদুল হাকিম প্রমুখ।
সূত্র জানায়, নগরীর শিরোইল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠে রাজশাহী রেশম কারখানা। টানা লোকসানে থাকায় ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানার প্রায় ৩০০ শ্রমিক।
বন্ধ ঘোষণার সময় রেশম কারখানায় ছিল ৬৩টি লুম। এর মধ্যে উৎপাদন চলতো পুরনো ৩৫টি লুমে। নতুন ২৮টি লুম চালুর আগেই বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটি। বন্ধের আগে কারখানাটিতে বছরে বস্ত্র উৎপাদন ছিল এক লাখ ৬ হাজার মিটার। কারখানায় ৬৩টি লুম চালু হলে বছরে উৎপাদন দাঁড়াতো দুই লাখ ৮৭ হাজার মিটারে।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৮ সালের ২৭ মে পরীক্ষামূলকভাবে রেশম কারখানার ৫টি লুম চালু হয়। এরপর ধাপে ধাপে চালু হয় আরও ১৪টি লুম। এখন ১৯টি লুম নিয়ে রেশমবস্ত্র উৎপাদন চলবে কারখানায়। এতে বছরে উৎপাদন হবে ২৫ থেকে ২৬ হাজার মিটার রেশম কাপড়। পর্যায়ক্রমে কারখানার আরও ২৩টি লুম চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, বস্ত্র উৎপাদনের উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী রেশম কারখানায় উৎপাদিত কাপড়ের বিক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। কারখানা থেকে রেশম কাপড়ও কেনেন তারা। এর আগে তারা রাজশাহী রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতিকে ধরে রেখে রেশম শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। রেশম বাংলাদেশের ঐতিহ্য।
তিনি বলেন, রেশমের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করে উন্নতমানের সুতা তৈরি করতে হবে। যাতে অল্প দামে ভালো কাপড় তৈরি করা যায়। তাহলে জনগণ সাশ্রয়ী মূল্যে রেশমের কাপড় পরতে পারবেন। তিনি বলেন, রাজশাহী মানে রাজশাহীর সিল্ক। এটাকে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। কিভাবে রেশম শিল্পকে লাভজনক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় এখন আমাদের সে বিষয়ে সাধনা করতে হবে। এটা নিয়ে আমাদের অনেক কাজ করে যেতে হবে। যেন আমরা রেশম ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা রেশম শিল্পকে একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। যাতে ভবিষ্যতে অনেকে এই মডেল অনুসরণ করতে পারে।
মতবিনিময় শেষে মন্ত্রী রেশম গবেষণা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পি-৩ কেন্দ্র ও রাজশাহী রেশম কারখানা ঘুরে দেখেন। রেশম গবেষণা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে তিনি একটি আধুনিক পলু পালন ঘরও উদ্বোধন করেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌগাছীর চাঁদপুরে রেশম ব্লক, সম্প্রসারণ এলাকা এবং মোহনপুর চাকী সেন্টার পরিদর্শন করেন।
এসপি