এবার কাদের মির্জার হাত থেকে চাল নিলেন সেই বৃদ্ধ
বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা হাত থেকে আবারও সাহায্য নিলেন বৃদ্ধ এনামুল হক কালু। রোববার (১৮ জুলাই) সকাল ৮টায় বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়ে আসেন তিনি। এসময় কাদের মির্জা তাকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১০ কেজি চাল দেন। এনামুল হক কালু বসুরহাট পৌরসভার বাসিন্দা।
এর আগে শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণের সময় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র বৃদ্ধ কালুর বুকে ঘুষি মারলে সেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন কাদের মির্জা।
রোববার চাল পেয়ে এনামুল হক কালু বলেন, কাপড় দেওয়ার সময় আমরা ঝামেলা করি দেখে মেয়র সাহেব (আবদুল কাদের মির্জা) হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন। মেয়র সাহেব আমারে মারে নাই। তিনি (কাদের মির্জা) খুব ভালো মানুষ। গরিব মানুষকে তিনি সাহায্য করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি আজকে আবার এসেছি মেয়র সাহেব থেকে চাল নেওয়ার জন্য। আমি নিজ থেকে এসেছি। মেয়র সাহেবের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। উনি সব সময় আমাদের সাহায্য করেন।
২০ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ফেসবুক লাইভের মধ্যে ১৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের সময় দেখা যায়, কাদের মির্জা এক বৃদ্ধকে শাড়ি দিয়েছেন। বৃদ্ধ শাড়িটি পরিবর্তন করতে চাইলে কাদের মির্জা তার বুকে ঘুষি মেরে সরিয়ে দেন। এরপর সেই বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার (১৬ জুলাই) রাত ৯টা ৪০ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
স্ট্যাটাসে কাদের মির্জা লিখেন, প্রিয় দেশবাসী, আপনারা জানেন মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনে জনজীবন অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি আমার পৌরসভা থেকে নিম্নআয়ের অসহায় মানুষের জন্য বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছি। এর আগেও আমি সর্বদা চেষ্টা করতাম, অসহায় গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে থাকতে। আমার পৌরসভা ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে, আমি শুধু কোম্পানীগঞ্জ নয়, কবিরহাট, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, সেনবাগসহ বিভিন্ন জনপদের অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করে আসছি। কখনও কোনো মানুষ সাহায্য প্রত্যাশা করে আমার কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে যায়নি।
আজও আমার পৌরসভাতে অসহায় মানুষদের এক হাজারের বেশি শাড়ি-লুঙ্গি, পাঁচশত জনকে নগদ অর্থ ও প্রায় দুই হাজার জনের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। পৌরসভার ছোট্ট আঙিনায় সহস্রাধিক মানুষ একত্রিত হয়ে যাওয়ায় দ্রুততার সঙ্গে কাপড় বিতরণ করতে হয়েছিল। যাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে তাদের দ্রুত চলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছিল। তখন একজন মানুষ কাপড় পাওয়ার পরও দাঁড়িয়ে থাকায় এবং একাধিকবার বলার পরও সে মাস্ক না লাগানোর কারণে তাকে দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য হাত দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এখানে তাকে আঘাত করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি কোনো আক্ষেপও করেননি।
সহস্রাধিক মানুষের মাঝে একযোগে এতগুলো ত্রাণ বিতরণ করার সময় অজান্তে কিছু অসাবধানতা হতে পারে। এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত কোনো কিছু করা হয়নি। আমি সব সময় অসহায় গরিব মানুষের পাশে আছি। কখনও কেউ আমার কাছে সাহায্যের জন্য এসে খালি হাতে ফিরে যায়নি। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমি যতদিন বেঁচে থাকব অসহায় গরিব মানুষের সেবা করে যাব।
সকলের কাছে প্রত্যাশা রাখব, অন্যের সমালোচনা না করে, যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় গরিব মানুষের সহযোগিতায় হাত বাড়ান। একজনের সমালোচনা না করে মানুষকে সহযোগিতা করুন।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। পৌরসভায় তৃতীয় মেয়াদে গত ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলে আলোচনায় আসেন তিনি।
হাসিব আল আমিন/এমএএস
