সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা মামলায় আরও একজন গ্রেফতার

নোয়াখালীতে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যা মামলায় আমজাদ হোসেন মাসুদ (৩৩) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মাসুদকে গ্রেফতার দেখাতে পিবিআইয়ের দাখিল করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২৫ জুলাই) নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মোসলেহ উদ্দিন মিজান এ আবেদন মঞ্জুর করেন।
গ্রেফতার আমজাদ হোসেন মাসুদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের মফিজ উল্ল্যার ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নোয়াখালী পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত শনিবার (২৪ জুলাই) রাত ১০টায় চরকালী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লার দোকান থেকে আমজাদ হোসেন মাসুদকে আটক করা হয়। তাকে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখাতে আদালতে আবেদন করলে আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা মামলায় এর আগে ১৭ জনকে গ্রেফতার ও শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। এদের রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কারও স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়নি।
এদের মধ্যে গত ৭ মার্চ বসুরহাট ডাকবাংলোর সামনে থেকে চরফকিরার বেলাল ওরফে পাঙ্খা বেলালকে আটক করে পিবিআই। পরে গত ১৮ মার্চ অন্য মামলায় আটক ১২ জনকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।
এরা হলেন- কোম্পানীগঞ্জের আলমগীর, রাহাত, আজিজুল হক মানিক, বাহাদুর, ফয়সাল আলম টিটু, বিক্রম চন্দ ভৌমিক, সুজায়েত উল্যাহ, দেলোয়ার, ইউসুফ নবী, আবদুল আমিন, মো. সেলিম ও মাসুদুর রহমান। এরা সবাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থক বলে পরিচিত।
অন্যদিকে গত ২৩ মার্চ কারাগারে থাকা আরও তিনজনকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখায় পিবিআই। এরা হলেন- উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও বসুরহাট বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজুল হক হাসেম, চরএলাহী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক ও মুছাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইকবাল চৌধুরী। এছাড়া গত ২৪ এপ্রিল অন্য মামলায় আটক সিরাজপুরের নাজিম উদ্দিন মিকনকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখায় পিবিআই। এরা চারজন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় পেশাগত কাজে ছবি সংগ্রহ করতে গেলে অস্ত্রধারীদের ছোড়া গুলিতে মারাত্মক আহত হন সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। তাকে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যার ঘটনায় তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাওলানা নুরুল হুদা মো. নোয়াব আলী বাদী হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মুজাক্কির দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বার্তাবাজারের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/আরএআর