মৃত্যুর আগে সেলিম ফিরতে চান প্রিয়জনদের কাছে

৪০ বছর আগে যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সেলিম মিয়া, তখন সবেমাত্র ম্যাট্রিক পাস (বর্তমান এসএসসি) করে তিনি যৌবনে পা রেখেছিলেন, এমন সময় পারিবারিক কলহ তৈরি হয়। নিজের চাপা ক্ষোভ আর অভিমানে কাউকে কিছু না বলেই রওনা দেন সিলেটের উদ্দেশে।
সেই সেলিম মিয়া এখন ষাটোর্ধ্ব। শারীরিক অসুস্থতায় সিলেটের জাফলংয়ের বাসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন চাঁদপুরের এই অভিমানী মানুষটি। নাওয়া-খাওয়া নেই। দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় পড়ে মহামারিতে শত শত মৃত্যুর মিছিল দেখে আর বাঁচার আশা দেখছেন না তিনি।
তবে মৃত্যুর আগে চাঁদপুরের নিজ পরিবারে ফেরা, বাবা-মা বা ভাই-বোনের সঙ্গে একটু কথা বলা, নিজের জন্মস্থানটুকু একবার দেখা এখন তার শেষ ইচ্ছা।
সেলিম মিয়ার বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে। তার বাবার নাম মৃত মো. আলকাছ আলী। দাদা মৃত শামছুল হক পাটওয়ারী। চাচা আব্দুর রাজ্জাক। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সেলিম সবার ছোট। বড় তিন ভাইয়ের নাম আব্দুল করিম, আব্দুর রহিম ও বিল্লাল (সম্ভবত)। মায়ের নাম আর বড় বোনের নাম মনে করতে পারছেন না তিনি। তবে দুজনের যেকোনো একজনের নাম নাসিমা বলে জানান। তিনি ১৯৮০ সালে চাঁদপুর ফরাক্কাবাদ উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক (এসএসসি) পাস করেন।
শয্যাশায়ী সেলিম মিয়া পোস্ট অফিস ফরাক্কাবাদ বলতে পারলেও ভুলে গেছেন নিজ গ্রামের নাম। জানালেন, গ্রাম গুরিশা বা গুলিশা।
সেলিম মিয়া জানান, ৪০ বছরের ব্যবধানে এবং সম্প্রতি স্ট্রোক করায় স্মৃতিতে নেই অনেক কিছুই। তবে জানালেন তার বড় বোনের বাড়ি সম্ভবত দাসপাড়ায়। কোনো এক ভাই ইনকাম টেক্স অফিসে চাকরি করতেন। এখন মৃত্যুর আগে একবার তার পরিবারের কাছে ফিরতে চান। অপেক্ষায় আছেন প্রিয়জনদের একনজর দেখার।
সিলেটের গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. করিম মাহমুদ লিমন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সেলিম মিয়ার যেসব তথ্য জানিয়েছি, এত দিনে তাকে তার পরিবার চেনার কথা। আমার মনে হয় তার পরিবার তাকে নেওয়ার চেষ্টা করছে না। আমাগী ৫ আগস্টের পর যদি লকডাউন না থাকে, তাহলে আমরা সেলিম মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে চাঁদপুরের ফরাক্কাবাদ এলাকায় আসব।
যদি কেউ তার পরিবারের সন্ধান পান, তাহলে আমার ০১৭১২-৩১৭০৪৬ নম্বরে যোগাযোগ করে সহযোগিতার অনুরোধ করছি।
শরীফুল ইসলাম/এনএ