টিকা কেন্দ্রে পানি, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে শাসালেন চেয়ারম্যান

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. অজয় কুমার সাহাকে শাসিয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন। রোববার (১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে রাস্তার বিপরীতে মর্ডান স্কুল মাঠ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল হক দোলনকে উত্তেজিত হতে দেখা যায়। অপরদিকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অজয় কুমার সাহা হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলনের অভিযোগ, হাসপাতাল চত্বরে পানির মধ্যে টিকা প্রদান করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অজয় কুমার সাহা। তাকে একাধিকবার টিকাদানের স্থানটি পরিবর্তন করে হাইস্কুল মাঠে নেওয়ার কথা বলা হলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্থান পরিবর্তন করেননি। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলছেন, বললেই হঠাৎ করে টিকা ক্যাম্প বদলানো কি সম্ভব হয়? খারাপ ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
আতাউল হক দোলন বলেন, উপজেলায় করোনার টিকাদান কেন্দ্র মডার্ন স্কুল থেকে স্থানান্তর করে শ্যামনগর নকিপুর হরিচরণ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নেওয়ার কথা বলেছি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে। তিনি সেটা শোনেননি। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে তাকে টিকা দান কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অজয় কুমার সাহা বলেন, সরকারি নির্দেশনায় করোনা ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। নিয়ম ছিল টিকার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ব্যবহার করতে হবে। তবে প্রথম রাউন্ডে টিকা প্রদানের সময় জনগণের সুবিধার্থে উপজেলা পরিষদের হলরুমটি ব্যবহার করা হয়েছিল। দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকা প্রদান করার সময় দেখা গেছে সেই হলরুটি অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাধ্য হয়েই হাসপাতালের বিপরীতে থাকা কিন্ডারগার্টেন স্কুলটিতে টিকাদান ক্যাম্প করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে স্কুলটির মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। তবে যেখানে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে সমস্যা নেই। মাঠে পানি থাকায় সামান্য অসুবিধা হলেও পানি নেমে যাবে। টিকাদান সামগ্রী, নমুনা সংগ্রহের সামগ্রীসহ আনুসঙ্গিক সামগ্রী হঠাৎ করে সরানো সম্ভব হয় না।
রোববার সকালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আমাকে ডাকেন। আমি যাওয়ার পর তিনি গালমন্দ শুরু করেন। আবার সেটির ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে দিয়েছেন। আমার মনে হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন।
ঘটনাটি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আগামীকাল সোমবার (২ জুলাই) থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি জরুরি মিটিংয়ে রয়েছি। বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলব।
আকরামুল ইসলাম/এনএ