সাড়ে ৪ মাস ধরে সমাজচ্যুত ২০ পরিবার

হবিগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ২০টি পরিবারকে সাড়ে চার মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রেখেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। তাদের পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তা কিংবা ওঠাবসা না করার জন্য এলাকায় মাইকিংও করা হয়েছে। এ অবস্থায় ২০টি পরিবারের সদস্যরা হাট-বাজারে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না। তারা অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছেন।
বুধবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া গ্রামের হাজী আব্দুল জব্বারের ছেলে জালাল উদ্দিন বলেন, একই গ্রামের জুলমত আলী, শুকুর আলীসহ কয়েকজনের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে গত ১৩ মার্চ স্থানীয়ভাবে সালিস বৈঠক হয়। সালিসে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়। কিন্তু লকুড়া গ্রামের একটি প্রভাবশালী পক্ষ সালিস বৈঠকের রায় অমান্য করে আমার গোষ্ঠীর গ্রামের ২০টি পরিবারকে সমাজচ্যুত করে এলাকায় মাইকিং করে।
মাইকিংয়ে বলা হয়, গ্রামের কোনো ব্যক্তি জালাল উদ্দিন গংয়ের সঙ্গে চলাফেরা, ওঠাবসা করলে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। তাদেরকে বয়কট করে সমাজচ্যুত করা হয়েছে।
সমাজচ্যুত করার ফলে ২০টি পরিবারের সদস্যরা হাট-বাজারে, মাঠে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না। ফলে অসহায়ত্বের মত একঘরে জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, তাদের রায় অমান্য করে জমি চাষ করতে গেলে কিংবা তাদের সন্তানরা খেলাধুলা করতে চাইলে তাদের ওপর প্রভাবশালীরা হামলা করছে। ফলে জীবনের নিরাপত্তার কারণে তাদের এক ঘরে দিনরাত পার করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের কাছে বার বার আবেদন করেও তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে জালাল উদ্দিন তাদেরকে এই অসহায়ত্বের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) দৌস মোহাম্মদ জানান, জালাল উদ্দিন গ্রামের সরকারি পতিত জমি সবাইকে না জানিয়ে নিজের নামে করে ফেলেছেন। এ জন্য গ্রামবাসী তাদেরকে সমাজচ্যুত করেছে। পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মোহাম্মদ নূর উদ্দিন/আরএআর