চুরির টাকায় ২৬ বিয়ে, ২৭-এ ধরা

একে একে ২৬ বিয়ে করে অবশেষে ২৭ নম্বর বিয়ের আগের দিন ধরা পড়লেন বিয়েপাগল বাবু শেখ ওরফে চোরা বাবু (৩৭) ও তার সহযোগী আবুল খায়ের মাতব্বর (৩২)। 

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত দুই যুবকের তিনদিনের রিমান্ড চেয়ে ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ভাঙ্গা ও সদরপুর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে প্রথমে উপজেলার জান্দী গ্রাম থেকে আবুল খায়ের ও পরে সদরপুর উপজেলার আকোটের চর গ্রাম থেকে বাবু শেখ ওরফে চোরা বাবুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

গ্রেপ্তার আবুল খায়ের মাতব্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার জান্দী গ্রামের আবু বক্করের ছেলে ও বাবু শেখ (৩৭) সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর গ্রামের দলিল উদ্দিন শেখের ছেলে। তারা সম্পর্কে ভায়রা ভাই।

পুলিশ জানায়, ৩ জানুয়ারি ভাঙ্গা উপজেলায় পর পর কয়েকটি চুরির ঘটনায় মামলা হয়। মামলার সূত্র ধরে প্রথমে জান্দী গ্রাম থেকে আবুল খায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ চোরের সরদার বিয়েপাগল বাবু চোরাকে গ্রেফতার করে।

বাবুর দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আজাদ বলেন, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করাই ছিল চোরা বাবুর টার্গেট।

তার জীবনের দুটি নেশা- প্রথমটি হল দামি দামি মোবাইল চুরি; দ্বিতীয়টি নতুন নতুন বিয়ে করে মজা করা। বাবু দিনের বেলায় চুরি করতেন। দামি মোবাইলগুলোর আইইএমই নম্বর পরিবর্তন করে তা বিক্রি করে চুরির টাকায় বিয়ের নেশায় মেতে উঠতেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দিন-দুপুরে সর্বশেষ চুরির ঘটনা ছিল ভাঙ্গা উপজেলার ছিলাধরচর গ্রামের পৌরসভায় চাকরিজীবী মিজানুরের বাড়িতে। সেখান থেকে একটি মোটরসাইকেল, কয়েকটি দামি মোবাইল, ল্যাপটপসহ মালামাল চুরি করেন বাবু। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি বড় চুরির ঘটনা ঘটান। ঘটনার ১০ দিন পরই ভাঙ্গার জান্দী গ্রামের দরিদ্র সোবাহানের মেয়ের সঙ্গে চোরা বাবুর বিয়ের দিন ঠিক হয়। বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বাবুর ২৭ নম্বর বিয়ের দিন ঠিক হয়। এর আগে ২৬ বিয়ে করেছেন একইভাবে। এটি সম্পন্ন হলে ২৭ বিয়ে হতো তার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজাদ বলেন, বাবুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চুরির ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা করে এ পর্যন্ত ২৬ বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছেন। বুধবার দুপুরে বাবু ও তার সহযোগীর তিনদিনের রিমান্ড চেয়ে ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলেও মালামাল উদ্ধার করতে পারিনি। মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এএম