এর চেয়ে ইউনিয়নের রাস্তাঘাট আরও ভালো

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে বৃষ্টি আশীর্বাদ হলেও কখনো কখনো অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। ফরিদপুরের নগরকান্দার পৌরসভার অর্ধশতাধিক পরিবারের জন্য তেমন অভিশাপই হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনিতেই বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে জুন থেকে শুরু হয়ে তার রেশ চলতে থাকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।
এবারও নগরকান্দা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য জগদিয়া এলাকায় বৃষ্টির পানি আটকে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গত জুন থেকে বৃষ্টিপাত হলে অর্ধশত পরিবার জলাবদ্ধতার শিকার হয়। পাশাপাশি স্কুল-কলেজও জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ হয়ে আছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এবারও দীর্ঘদিন ভুগতে হবে।
নগরকান্দা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে হাটবাজার, স্কুল, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, থানা ও উপজেলা পরিষদ এবং প্রশাসনের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ অফিস। স্থানীয়রা বারবার পৌর কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে দীর্ঘদিনের এ সমস্যা সমাধানে নেওয়া হয়নি যথাযথ উদ্যোগ।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে পানি ঢুকে যাচ্ছে বাড়ির মধ্যে। এ এলাকায় পানিনিষ্কাশন-ব্যবস্থা না থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকছে বৃষ্টির পানি। এতে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না অনেকেই। রান্না করা, খাওয়াদাওয়াসহ প্রায় সব কাজ করতে হচ্ছে ঘরের মধ্যেই।

তারা জানান, সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছে নারী ও শিশুরা। ভুক্তভোগীরা হাটবাজারে বা অফিস-আদালতে যাওয়ার সময় বিপদে পড়ছেন প্রতিদিন। আটকে থাকা পানির মধ্য দিয়ে চলাচলের সময় কাদাযুক্ত নোংরা পানিতে পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পরনের কাপড়। টিউবওয়েলগুলো তলিয়ে যাওয়ায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান (২৩) বলেন, নর্দমার ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এখানের পানি পাইপ বা অন্য কোনো মাধ্যমে বের হতে পারে না। তাই বৃষ্টির পানি জমে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ জন্য পুরো বর্ষা মৌসুম আমাদের দুর্ভোগে কাটাতে হয়।
একই এলাকার বাসিন্দা চৈতী আক্তার বলেন, আমাদের এটাকে পৌরসভা বলতে লজ্জা করে। ভাঙাচোরা রাস্তা। রাস্তায় পানি জমে থাকে। আবার রাস্তা চাপা ও ছোট। নেই কোনো সড়কবাতি। এর চেয়ে ইউনিয়নের রাস্তাঘাট আরও ভালো আছে।
এ ব্যাপারে নগরকান্দা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাকির হোসেন বলেন, ওই এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগের বিষয়টি তার জানা আছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন করতে কোনো কিছু করা এ মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এ এলাকায় আটকে থাকা বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের জন্য স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই জরুরি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, খুব শিগগিরই এর একটা সাময়িক সমাধান করতে পারব।
প্রসঙ্গত, ওই এলাকায় তিন বছর ধরে এ জলাবদ্ধতার সমস্যা চলছে। বিগত বছর পৌরসভা নির্বাচন সামনে রেখে পাম্প দিয়ে পানি সেচ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন মনোনয়নপ্রত্যাশী কয়েকজন প্রার্থী। কিন্তু চলতি বছর এ জাতীয় কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
এনএ