বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ৮ জেলের পরিবারে মাতম

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা ট্রলারডুবির ৫ দিন পার হলেও ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের নিখোঁজ ৮ জেলের সন্ধান এখনো মেলেনি। নিখোঁজ ওই ৮ জেলে পরিবারে চলছে মাতম। তবে জেলেদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে ভোলার ভেলুমিয়া ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়সর হাওলাদারের ছেলে নিখোঁজ ট্রলারমালিক নিররের বাড়িতে গেলে স্বজনদের কান্নার শব্দে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
কথা হয় নিখোঁজ নিরবের মা মানসুরা বিবির সঙ্গে। তিনি বলেন, বছর খানেক আগে কৃষি ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ১৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার তৈরি করেন।

৫ সেপ্টেম্বর নিরব আরও ৯ জনকে সাথে নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। কিন্তু বাড়ি থেকে যাওয়ার ৫ দিন পরে খবর পাই ঝড়ে ট্রলার ডুবে গেছে। তার পর থেকে ছেলে ও নাতির কোনো খোঁজ নাই বলে জানান তিনি।
ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নিখোঁজ সিরাজ বেপারী বাড়িতেও থমথমে অবস্থা। কথা হয় সিরাজ বেপারীর স্ত্রী জান্নাত বেগমের সাথে। তিনি বলেন, বাড়ি থেকে যাওয়ার পর রোববার রাতে ফোন দিলে মেয়ের সাথে কথা হয়। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ।
আরেক নিখোঁজ জেলে দেলোয়ার চৌকিদারের ছোট ছেলে সুমন বলেন, পরিবারের অভাবের পাশাপাশি আমার পায়ের অপারেশন ও বড় ভাইয়ের আটোরিকশা কেনার টাকার জোগান দিতে এলাকার অন্যদের সাথে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এরপর থেকে তার কোনো খবর নেই।

বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে নিখোঁজ ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৮ জেলে পরিবারের চলছে একই অবস্থা। স্বজনরা সরকারপ্রধানের কাছে নিখোঁজদের উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানান।
জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, বিষয়টি জানতে পেরে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের জন্য কোস্টগার্ডকে জানানো হয়েছে। তারা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন অপারেশন কর্মকর্তা লে. সাফকাত জানান, আমরা বঙ্গোপসাগরে ৮ জেলে নিখোঁজের খবর পেয়েছি। খোঁজখবর নিচ্ছি। নিখোঁজদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ, ৫ সেপ্টেম্বর চরফ্যাশনে সামরাজ ঘাট থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরে গেলে ভোররাতে ঝড়ের কবলে পড়ে ১১ জেলে ও মাঝিমাল্লা বোঝাই মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। সেখান থেকে তিন জেলে জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং বাকি ৮ জেলে এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
এমএসআর