চলাচলের রাস্তায় ইটের দেয়াল, সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ ৫ পরিবার
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে চলাচলের সড়কে ইটের দেয়াল তৈরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। ফলে এক সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে পাঁচটি পরিবার।
বিপাকে পড়েছে এসব পরিবারের বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুরা। স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। আধা কিলোমিটার পথ ঘুরে নৌকায় করে হাট-বাজার ও চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী লাল্টু সরদার গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বিষয়টি কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ রায়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
লাল্টু সরদার অভিযোগ করে বলেন, রাস্তাটি ২০০ বছর ধরে আমরা ব্যবহার করে আসছি। প্রতিবেশী আসলাম শেখ, লাড্ডু শেখ ও হাসান শেখ স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের চলাচলের রাস্তাটি ইটের প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পাঁচটি পরিবারের বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উত্তর পাশে আসলাম শেখ ইটের প্রাচীর তুলেছেন। তার পাশে লাড্ডু শেখ টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রেখেছেন। পূর্ব পাশে ইটের প্রাচীর তুলছে। উত্তর ও পূর্ব পাশ দিয়ে প্রাচীর তুলে হাঁটার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে পানি থাকায় যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থ নেই।
অবরুদ্ধ এই পাঁচ পরিবারের সদস্য সংখ্যা অর্ধশত। বাড়িতে ছয়জন শিক্ষার্থী, একজন অন্তঃসত্ত্বা ও বয়োজ্যেষ্ঠ রয়েছেন। দীর্ঘ দিন পর স্কুল-কলেজ খুললেও ক্লঅসে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্য ফুলজান বেগম (৭৫) বলেন, এক সপ্তাহ ধরে আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। আমার নাতনি সাড়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যেকোনো সময় সন্তান প্রসবের জন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হতে পারে। তাই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। এ বিপদ থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে আসলাম শেখের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। কথা হয় লাড্ডু শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৩২ বছর আমরা তাদের চলাচলে বাধা দেইনি। এক সপ্তাহ আগে আমাদের সঙ্গে লাল্টু সরদারদের বিবাদ হয়। তাই আমরা পথ বন্ধ করে দিয়েছি।
নিজামকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাব্বত হোসেন জুয়েল বলেন, পাঁচটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক। বিষয়টি সমাধানের জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসা হয়েছিল। কোনো সমাধান করতে পারেনি। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে মীমাংসা করার জন্য বলেছি। তারা ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসপি