পদ্মার ভাঙনে ঝুঁকিতে স্কুল, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কে দিন পার করছে সাধারণ মানুষ। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর সেলিমপুরের নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ৪০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে নদী থেকে মাত্র ৫ মিটার দূরে থাকা চর সেলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আতঙ্কে বিদ্যালয়ে কমেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চর সেলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে প্রায় ৪০ মিটার এলাকার নদীর তীর সুরক্ষার কংক্রিটের তৈরি সিসি ব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ওই এলাকার অর্ধেকের বসতবাড়ি, মসজিদ ও একটি স্কুল ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় স্কুলটিও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ কারণে ভাঙন আতঙ্কে স্কুলটির মূল ভবন বাদ দিয়ে টিনশেড ঘরে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। মূল ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকেই বাঁধের কাজে অনিয়ম চলে আসছিল। কয়েকবার কাজে বাধা দেওয়া হলেও তারা কোনো পাত্তা না দিয়েই নিজেদের মত কাজ চালিয়ে গেছেন। এ কারণে কাজ ভালো না হওয়ায় দফায় দফায় বিভিন্ন স্থানের সিসি ব্লক নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে।
জানা গেছে, নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পে ৩৭৬ কোটি টাকার কাজ হয়। এতে সাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করে। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই কয়েক দফার ভাঙনে সাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ মিটার এলাকার কংক্রিটের তৈরি সিসি ব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমান আলী ফকির ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে হঠাৎ স্কুলের পাশে ভাঙন দেখা দেয়। বড় ফাটল তৈরি হয়। মুহূর্তেই স্কুলের পাশে ৪০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক নদীতে বিলীন হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার স্কুলে শিশুশ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ১০৮ জন শিক্ষার্থী। করোনায় দীর্ঘ দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর খুললেও নদী ভাঙনের আতঙ্কে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের আসতে দিচ্ছে না। স্কুলটি ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় মূল ভবন বাদ দিয়ে টিনশেডে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মার পানি কমতে শুরু করায় নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। আজ সকালে চর সেলিমপুর স্কুলের পাশে ৪০ মিটার এলাকায় সিসি ব্লক নদীগর্ভে চলে গেছে। খবর পেয়ে জরুরি ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
মীর সামসুজ্জামান/আরএআর