বিদ্যালয়ের মাঠ ঠিকাদারের দখলে

পিরোজপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে প্রায় ৯ থেকে ১০ মাস আগে সড়ক নির্মাণের বিভিন্ন উপকরণাদি রাখা হয়। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। কিন্তু এসব বিপজ্জনক বস্তু রাখায় বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, বিদ্যালয়ের কোনো পূর্বানুমতি ছাড়াই নিয়োজিত ঠিকাদার রাতের অন্ধকারে ট্রাক ভর্তি করে এসব নির্মাণসামগ্রী বিদ্যালয়ের মাঠে রেখে যান। কয়েক দফা বললেও তার কোনো হদিস মিলছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের মধ্যে বিপুল পরিমাণ কালো পাথরের টুকরা ও প্রায় ১৫০ ব্যারেল (ড্রাম) ভর্তি পিচ (বিটুমিন) রাখা আছে। দীর্ঘদিনেও মাঠ থেকে অপসারণ না করায় শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না। পাথরের খোয়া ও পিচ তারা দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে দেখছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, অন্তত ৯ থেকে ১০ মাস আগে এলজিইডির আওতায় দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কলাখালী নতুন হাট থেকে কাথুলিয়া বাজার পর্যন্ত আড়াই কিমি নতুন কার্পেটিং গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের কাজ পায় এমডি মাহফুজ খান লিমিটেড ও আবির অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তিন কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের ৮০ ভাগ কাজ শেষ করে বাকি কাজের মালামাল বিদ্যালয়ের মাঠে ও পাশের সড়কে ফেলে রাখে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার রেজাউল করিম সিকদার মন্টু ঢাকা পোস্টকে জানান, রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ বৃষ্টির কারণে বন্ধ ছিল। আমরা কাজ শুরু করেছি। দ্রুত বিদ্যালয় মাঠ থেকে পাথরসহ অন্যান্য আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক ঘেঁষে ও মাঠে পাথরের খোয়াগুলো দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় এখানে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে এবং শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরা থাকছেন দুশ্চিন্তায়।
দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতুল কুমার হালদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আদালতে মামলা চলমান থাকায় ব্যবস্থাপনা কমিটি হচ্ছে না। তাই আমরা শিক্ষকরা অনেকটা অভিভাবকহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছি। নিয়োজিত ঠিকাদার আমাকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে পাথর ও ব্যারেল ভর্তি বিটুমিন রেখে যায়। এ কারণে আমার ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছি।
সদর উপজেলা প্রকৌশলী হরষিৎ সরকার ঢাকা পোস্টকে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত পাথর সরিয়ে নিয়ে মাঠ খালি করা ও কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। রাস্তার ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে বর্ষার কারণে রাস্তার বিটুমিনের কাজ করা যায় না বিধায় তারা এ কাজ করেছে।
মো. আবীর হাসান/এনএ