২০২৬ সালের প্রাইভেট এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে বোর্ডের নির্দেশনা

শিক্ষক, পুলিশ, প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য এবং শারীরিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড় রেখে ২০২৬ সালের প্রাইভেট এইচএসসি পরীক্ষার নিয়মাবলি প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা।
নির্দেশনায় টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড়, চাকরির মেয়াদের প্রমাণপত্র এবং স্ক্রাইব ব্যবহারের সুযোগসহ বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন, আবেদন, কেন্দ্র নির্ধারণ ও গ্রহণযোগ্য বিষয় নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তি এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা ২০২১ এবং তার আগের যেকোনো বছরের উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাসের ক্ষেত্রেও ২০২০ বা তার আগের সন গ্রহণযোগ্য হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ছাড়া প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা ২০২৬ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। বোর্ডের অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের মতো তাদের ক্ষেত্রেও সব পরীক্ষা–পরিচালনা বিধি প্রযোজ্য হবে। নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষা দিতে হবে বোর্ড নির্ধারিত যেকোনো একটি কলেজের মাধ্যমে, তবে শিক্ষক, পুলিশ, প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য ও শারীরিক বা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের এই টেস্ট পরীক্ষা দিতে হবে না। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইলসহ মোট ১৮টি কলেজকে নির্বাচনী পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করেছে বোর্ড।
তবে প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা যে কলেজের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করবে, সেখানকার নির্ধারিত কেন্দ্রেই মূল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্র পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। তারা শুধু মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও ইসলামি শিক্ষা শাখায় পরীক্ষা দিতে পারবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ছাড়া অন্য কোনো ব্যাবহারিক–সম্বলিত বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না এবং প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা চতুর্থ বিষয় নিতে পারবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় দলিল (প্রমাণ) ও ফিসহ সাদা কাগজে আবেদন জমা দিতে হবে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে। রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত হয়েছে ১০০ টাকা। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন (ইএসআইএফ) সম্পন্ন করতে হবে ২১ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৬ এর মধ্যে। পূরণ করা অনলাইন তালিকা ও মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট বোর্ডের নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সত্যায়িত করে ১১ জানুয়ারি ২০২৬ এর মধ্যে জমা দিতে হবে।
আর এসএসসিতে ১৯৯৫ সালের আগে উত্তীর্ণদের মূল নম্বরপত্রে ‘ভেরিফাইড অ্যান্ড ফাউন্ড করেক্ট’ উল্লেখ থাকতে হবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৯৯ সালের আগের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য এবং ২০১৭ বা তার আগের এসএসসি উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের মূল প্রবেশপত্র জমা দিতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, চরিত্র ও আচরণসংক্রান্ত সনদ অবশ্যই কলেজের অধ্যক্ষ, বোর্ড–সদস্য বা সরকারি গেজেটেড কর্মকর্তার কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। শিক্ষক প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ অনুযায়ী অন্তত তিন বছরের চাকরির প্রমাণ এবং পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ক্ষেত্রে অন্তত এক বছরের চাকরির সনদ প্রয়োজন। শারীরিক বা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা স্ক্রাইব নিতে চাইলে বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীকে স্ক্রাইব হিসেবে নিতে হবে।
অন্যদিকে, ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড বিতরণ করা হবে। এ সময় ‘প্রভলেমেটিক প্রিন্ট আউট’ সংশোধন করে ২০ জানুয়ারি ২০২৬ এর মধ্যে বোর্ডে জমা দিতে হবে। নির্বাচনী পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, আইসিটিসহ যেকোনো তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ১০০ নম্বরের তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দিতে হবে। রেজিস্ট্রেশন শুধু এক বছরের জন্য বজায় থাকবে। পাঠ্যসূচির নির্ধারিত গুচ্ছ অনুযায়ী বিষয় না নিলে পরীক্ষা বাতিল হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আরএইচটি/বিআরইউ