নওগাঁয় পুলিশের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর

নওগাঁয় বাসচালককে আটকের জেরে পুলিশের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের একটি পিকআপসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষে ৮-১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।
বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটক বাস চালকের নাম সুলেমান। বাসটি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে শাহিন পরিবহনের একটি বাস বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে জেলার ধামইরহাটের উদ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। বাসস্ট্যান্ড থেকে এক কিলোমিটার দূরে শহরের বিসিক শিল্প নগরীর সামনে পাশের রাস্তা থেকে একটি মোটরসাইকেল নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কে ওঠার সময় ওই বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। পরে সকাল ১০টার দিকে বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজশাহীগামী মেঘ বালিকা বাস বিসিক শিল্প নগরীর সামনে গেলে স্থানীয়রা ওই বাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। প্রতিবাদে শ্রমিকরা বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ডে রাস্তার অর্ধেক বরাবর বাস রাখে। এতে পথচারী ও অন্য যানবাহন চলাচলে সমস্যা হয়।
বিকেল ৫টার দিকে বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে সকালের ঘটনায় বাসচালক সোলেমানকে পুলিশ আটক করে। তাকে থানায় নিয়ে আসার সময় কয়েকজন শ্রমিক বাধা দেন। পুলিশ তাদেরকে ধাক্কা দেয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। অপরদিকে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৮-১০ জন আহত হন। শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের একটি পিকআপসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।
হানিফ বাসের সুপারভাইজার রায়হান আলী ও চালকের সহযোগী ইমরান হোসেন বলেন, সকালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাসচালক সোলেমানকে আটক করে। আমরা পুলিশকে মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে তাকে নিয়ে যেতে বলি। পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে মারপিট শুরু করে পুলিশ। এতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৮-১০ জন বাস শ্রমিক আহত হন।
নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদাক মতিউজ্জামান মতি বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার অভ্যন্তরে বাস চলাচল করবে কিনা সেটা শ্রমিকদের বিষয়। হঠাৎ করেই পুলিশ শ্রমিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। পুলিশ প্রথমে শ্রমিকদের ওপর হামলা এবং গুলি চালিয়েছে। শ্রমিকরা আত্মরক্ষার্থে ইটপাটকেল ছুড়েছে। ৮-১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। তাদের নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সুলেমান নামে এক বাসচালককে আটক এবং একটি বাস জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শ্রমিকরা হামলা করায় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
দেলোয়ার হোসেন/আরএআর