নিজেকে সুপার বানিয়ে নিয়োগ দিলেন শিক্ষক-কর্মচারী

জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগে করা মামলায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়ার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সহকারী সুপার শাহানুর আলম ও ভুয়া সভাপতি আব্দুল খালেকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন আলী এ আদেশ দেন।
শাহানুর আলম ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর ঘুঘুরহাট গ্রামের ময়েন উদ্দিনের ছেলে ও আব্দুল খালেক দাশিয়ারছড়ার মৃত আজগার আলীর ছেলে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ জানান, আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তদের কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদরাসার সহকারী সুপার পদে থেকে শাহানুর আলম নিজেকে সুপার এবং আব্দুল খালেক নামের একজনকে সভাপতি দেখিয়ে মাদরাসা সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া ও সভাপতি আবদুর রহমান মিয়ার অলক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেন।
বিষয়টি জানতে পেরে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রহমান মিয়া চলতি বছরের জুন মাসে শাহানুর আলম ও আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে জালিয়াতি অভিযোগ এনে মামলা করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা হওয়ার পর সোমবার অভিযুক্ত সহকারী সুপার শাহানুর আলম ও ‘ভুয়া সভাপতি’ আব্দুল খালেক আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া জানান, শাহানুর আলম সহকারী সুপার হলেও নিজেকে সুপার এবং আব্দুল খালেককে ভুয়া সভাপতি দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে সেসব কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। পরে বিষয়টি জানতে পেরে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুর রহমান মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান।
তিনি আরও বলেন, আমি সুপার ও আবদুর রহমান প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হলেও সহকারী সুপার শাহানুর আলম নিজেকে সুপার ও আব্দুল খালেককে ভুয়া সভাপতি দেখিয়ে ভুয়া সিল বানিয়ে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। যা অবৈধ এবং প্রতারণার শামিল।
প্রসঙ্গত, ছিটমহল বিনিময়ের পরপরই ২০১৫ সালে দাশিয়ারছড়ার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে এটি সরকারি ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী বৈধ নিয়োগে কর্মরত আছেন বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা এখনো মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) পাননি।
মো. জুয়েল রানা/এনএ