কুয়াকাটা সৈকতে বিজয়ের আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আনন্দ উপভোগ করতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে মিলিত হয়েছেন হাজারো পর্যটক। তিন দিনের সরকারি ছুটিতে নানা বয়সী পর্যটকদের পদভারে মুখর সাগরকন্যা কুয়াকাটা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের কুয়াকাটার সৌন্দর্য দেখতে বছরের বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, কুয়াকাটা সৈকতে আনন্দ উল্লাসে মেতেছে নানা বয়সের মানুষ। শিশুরা বালুর চরে পানিতে গা মিশিয়ে আনন্দ করছে, মধ্যে বয়সীরা গভীর সমুদ্রে গোসলে মেতেছেন আর বৃদ্ধরা ছাতার নিচে ব্রেঞ্চে বসে উপভোগ করছেন বিশাল সমুদ্রের নীল জলরাশি ও ঢেউয়ের গর্জন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার মাইকিং করে মাস্ক পরে চলাচলের কথা বলা হলেও দুই-এক জন ছাড়া কারও মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। এমনকি সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখেননি কেউ।

সিলেট থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক নোমান আবদুল্লাহ বলেন, তিন দিনের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটা এসেছি। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্যই এবার ট্যুরে আসা হয়েছে। ওরা সৈকতে লাফালাফি, দুষ্টমি করে বিজয় আনন্দ উপভোগ করছে।
টানা তিন দিনের ছুটিতে অনেক আগেই বুকিং হয়ে গেছে কুয়াকাটার বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল। পর্যটক বেশি হওয়ায় বিগত দিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঝন্টু আকন বলেন, আজকে কুয়াকাটায় বিপুল সংখ্যক পর্যটক এসেছে। আমাদের বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে। তবে বিদেশি কোনো পর্যটক আমার চোখে পড়েনি।
রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নাহিয়ান-ঐশী আক্তার রেখা দম্পতি বলেন, এবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসলাম। বাবা-মা ছাতার নিচে বসে আছে, আমরা ছবি তুলছি, বাচ্চারা খেলা করছে। আগের থেকে কুয়াকাটার পরিবেশটাও অনেক সুন্দর, ভালো লাগছে।
আবাসিক হোটেল কানচাই ইন’র ম্যানেজার জুয়েল রানা বলেন, আমাদের হোটেলের সবগুলো কক্ষ বুকিং হয়েছে। আগামী দুই দিনের জন্য বুকিং রয়েছে। এবারের বিজয় দিবসে কুয়াকাটায় আশানুরূপ পর্যটক এসেছে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, বিজয় দিবসে কুয়াকাটায় অনেক পর্যটক এসেছে। ইতোমধ্যে আমি ট্যুরিস্ট পুলিশ, হোটেল-মোটেল অ্যাসোসিয়েশন, খাবার হোটেলসহ সকল পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। যাতে পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে ঘুরতে পারেন এবং কোনো প্রকার প্রতারণার শিকার না হন। এজন্য কুয়াকাটা পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি টিম সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক বলেন, তিন দিনের ছুটিতে অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটায়। যে কারণে আগে থেকেই ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকটি টিম মোতায়েন রয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি ও মাইকিং করে বারবার মাস্ক পড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ পর্যটকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
কাজী সাঈদ/আরএআর