থানা ঘেরাও করলেন আ.লীগের নেতাকর্মীরা
মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ফয়সাল বিপ্লবের লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ায় সদর থানা ঘেরাও করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত তারা থানা প্রাঙ্গণে অবস্থান করেন। এ সময় বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশের গাড়ি অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এতে থানা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুন্সিগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগ সংসদ সদস্য মৃনাল কান্তি দাসের পক্ষে, আরেক ভাগ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ও তার ছেলে পৌর মেয়র বিপ্লবের পক্ষে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৌরসভার পাঁচঘরিয়া কান্দি এলাকায় সংসদ সদস্যের অনুসারী শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ওয়াহিদুজ্জামান বাবুর ওপর হামলা করেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র সাজ্জাদ সাগর। তিনি পৌর মেয়রের অনুসারী। পরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্য মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে দুই পক্ষ।
এদিকে পৌর মেয়র ফয়সাল বিপ্লবের নেতৃত্বে বুধবার বেলা দুপুর ১২টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত শতাধিক নেতাকর্মী থানার প্রধান ফটক ঘেরাও করে অবস্থান নেন। এতে শহরের থানা সড়কটিতে সাময়িক যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় পৌরসভার কাউন্সিলর মো. সোহেল রানা, আব্দুস সাত্তার মুন্সী, আওলাদ হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সদর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুরুজ মিয়া, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওলাদ বলেন, থানায় এমপির লোকজনের পক্ষে মামলা নেওয়া হয়। মেয়র সাহেবের পক্ষের লোকজনের মামলা নেওয়া হয় না। উল্টো হয়রানি করা হয়। আমরা কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী এটার প্রতিবাদ করতে থানায় গিয়েছি।
তবে পৌর মেয়র ফয়সাল বিপ্লব বলেন, আমরা থানা ঘেরাও করিনি। থানায় গিয়েছিলাম নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে।
তাহলে আপনার সঙ্গে এত মানুষ কেন গিয়েছিল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি থানার ভেতরে ছিলাম। মানুষজন বেশি ছিল। পরে তাদের নিয়ে চলে এসেছি।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, পৌর মেয়র শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসেছিলেন।
থানায় এত লোকজন ও স্লোগান কেন হচ্ছিল- জানতে চাইলে ওসি বলেন, তিনি (পৌর মেয়র) জনপ্রতিনিধি, তাই তিনি যখন থানায় আসেন তার সঙ্গে নেতাকর্মীরা চলে আসেন। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার পৌরসভার পাঁচঘরিয়া কান্দি এলাকায় সেখানকার কাউন্সিলর সাগর এবং ওয়াহিদুজ্জামান বাবুল নামে এক ব্যাক্তির মধ্যে তুচ্ছ একটি ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পক্ষ দুটি থেকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া যায়। মেয়র এসেছিলেন যেন এ ঘটনায় কাউকে হয়রানি করা না হয় সে বিষয়টি বলতে। থানা ঘেরাওয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ব.ম শামীম/আরএআর