নিয়মিত নামাজ আদায়সহ ১৩ শর্তে সাজাপ্রাপ্ত আসামি থাকবেন বাড়ি
মাদক মামলায় এক বছরের সাজা দিয়ে আসামিকে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়সহ ১৩ শর্তে বাড়িতে থাকার আদেশ দিয়েছেন আদালত। খাগড়াছড়ি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জি এম ফারহান ইসতিয়াক বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে মুচলেকা নিয়ে আসামিকে দুই জিম্মাদারের হাতে তুলে দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম মো. ফারুক (৩৪)। তিনি খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলার পশ্চিম বেতছড়ি এলাকার মো. ফজলু গাজীর ছেলে।
কোর্ট ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর আলম জানান, একটি মাদক মামলায় আদালত মো. ফারুককে এক বছরের কারাদণ্ড দিলেও তাকে জেলে গিয়ে সাজা খাটতে হবে না। এই এক বছর আসামি আদালত নিযুক্ত প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে নিজেকে সমর্পণ করবেন। আসামি তার বাসস্থান এবং জীবিকার উপায় সম্পর্কে প্রবেশন অফিসারকে অবহিত করবেন। সৎ ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করবেন এবং সৎ উপায়ে জীবিকা অর্জনের জন্য সচেষ্ট থাকবেন। আদালত কর্তৃক তলব করা হলে হাজির না হলে দণ্ড ভোগ করতে বাধ্য থাকবেন। সময় সময় প্রবেশন অফিসার কর্তৃক প্রদেয় আইনানুগ মৌখিক বা লিখিত উপদেশসমূহ মেনে চলবেন।
আদালতের পূর্বানুমতি ছাড়া বাংলাদেশ ত্যাগ করে কোথায়ও যাবেন না। দুশ্চরিত্র লোকের সাথে মেলামেশা করবেন না। কোনো প্রকার লাম্পট্য কাজে লিপ্ত হবেন না। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে। ১০০টি বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রোপণ ও পরিচর্যা করবেন। প্রত্যেক মাসে একজন এতিম বাচ্চাকে এক বেলা খাওয়াবেন। দেশে প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য কোনো প্রকার অপরাধ কর্মে লিপ্ত হবেন না এবং দেশে প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে। স্বেচ্ছায় বা কারও প্ররোচনায় শান্তি ভঙ্গের কোনো কাজে লিপ্ত হবেন না অথবা অংশগ্রহণ করবেন না। উল্লেখিত শর্তের কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে আদালত প্রদত্ত যে কোনো শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য থাকবেন।
আসামির দুই আত্মীয় আসাদুল হক ও মো. জুয়েল হোসেন আসামির মুচলেকায় সাক্ষী
হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ২০১৯ সালে মাত্র ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে আসামির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহনণ শেষে আদালত যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। আসামির প্রথম অপরাধ বিবেচনায় আদালত তাকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমা আদালতের এই রায়কে দৃষ্টান্তমূলক উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে অনেকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি সরকারি চাকরি পেতে অসুবিধায় পড়বেন না।
জাফর সবুজ/আরএআর