গৃহপরিচারিকাকে পুড়িয়ে হত্যা, একজনের যাবজ্জীবন

খুলনার সোনাডঙ্গা থানার আরমবাগ এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ির গৃহপরিচারিকাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামি শেখ খুরশিদুল আলম ওরফে রুবেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত -৩ এর বিচারক মাহমুদা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন। তবে মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করাতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালতের সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে ফুলতলা উপজেলার দামোদার গ্রামের দক্ষিণপাড়ার ওই নারী সোনাডাঙ্গার আরামবাগ আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে গৃহপরিচারিকা কাজ নেয়। তখন থেকে গৃহকর্তার ছেলে রুবেল প্রায়ই তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখায়। কিন্তু ওই গৃহপরিচারিকা তাতেও রাজি হয়নি। অতপর বিয়ের প্রলোভনে তারা উভয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একসময়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে গৃহপরিচারিকা। পরে রুবেল বিষয়টি বুঝতে পেরে এড়িয়ে চলতে থাকে তাকে। একপর্যায়ে ভাবির প্ররোচনায় গৃহপরিচারিকা গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করা হয়।
পরে রুবেলকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় গৃহপরিচারিকা। ঘটনার দিন আসামির ভাবি কর্মক্ষেত্রে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর ভিকটিম বিয়ের জন্য রুবেলকে আবারও চাপ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গৃহপরিচারিকা আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় রুবেল। বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে গৃহপরিচারিকা। তার চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে এসে তাকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়।
মৃত্যুর পূর্বে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেয় সে। সেখানে সব ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করের গৃহপরিচারিকা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানার এসআই টিপু লাল দাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওই বছরের ৪ অক্টোবর চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, শেখ খুরশিদ আলম রুবেল, ভাবি হোসনে আরা রোজি, নার্স মিনা বেগম ও বিউটি বেগম। তদন্ত কর্মকর্তা তার তদন্তে উল্লেখ করেছেন তারা সকলে এ ঘটনা জানতেন। তারা চেষ্টা করলে মেয়েটিকে অল্প বয়সে মরতে হতো না।
মোহাম্মদ মিলন/এমএসআর